সংবাদ প্রতিনিধি, নদিয়াঃ সিএএ-এনআরসি আইন লাগু হয়ে গিয়েছে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে কাকদ্বীপ থেকে কন্যা কুমারিকা। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যে দু-দিনে দুটি বড় কর্মসূচি করলেন আরামবাগ ও কৃষ্ণনগরে কিন্তু কোথাও এ বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করলেন না তিনি। সন্দেশখালি থেকে দুর্নীতির গন্ডিতেই আটকে থাকলেন এই গেরুয়া নেতা। অথচ তৃণমূল নাগরিকত্ব ইস্যুতে যত কেন্দ্রের সমালোচনা করে রাজ্যের বিজেপি নেতারা মতুয়াদের ততই আশ্বাস জুগিয়ে যান। কৃষ্ণনগরে এই মতুয়া সম্প্রদায়ের উপর নির্বাচনী ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করে। এই সম্প্রদায়ের ভোটেই জিতে প্রথমবার সংসদে গিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র, দাবি করেন বিজেপি নেতারাও।
চলতি বছর ফ্রেব্রুয়ারী মাসে দিল্লিতে এক ইভেন্টে যোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, লোকসভা ভোটের আগেই কেন্দ্রীয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করা হবে দেশে। এমনকি সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য অনলাইনেই আবেদন জানানো যেতে পারে। এর জন্য অনলাইন পোর্টালও তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। আবেদনকারির দাবি মতো ভারতে তাঁদের প্রবেশের সাল ইনপুট করা ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে কোনও নথি চওয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছিল।
“ওই বিষয়টি অমিত শাহের জন্য মোদি রেখে দিয়েছেন। ২০১৯ সালে আইন পাশ হয়ে গিয়েছে। যদি হওয়ার থাকত তাহলে এতদিনে হয়ে যেত।”-অধীর
এই সিএএ, এনআরসি ইস্যুতে ২০১৯-এ শেষ দিকে দেশ জুড়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই সময় আইনটি কার্যকর হলেও তা প্রয়োগ করা হয়নি। তখন শাহ দাবি করেছিলেন, কোভিড চলে গেলেই সিএএ-র নিয়ম তৈরি করে তা প্রয়োগ করা হবে। এদিন প্রধানমন্ত্রী এড়িয়েই গেলেন সিএএ-এনআরসি ইস্যু। অথচ মতুয়াদের জন্য মোদির বিশেষ বার্তা দেওয়ার প্রত্যাশা করেছিলেন কৃষ্ণনগরের অনেকেই। এমনকি বিজেপি’র নদিয়া জেলার নেতারাও ভেবেছিলেন সেই বার্তায় শান দিয়ে নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলতে। কিন্তু বাস্তবে একটি শব্দও প্রধানমন্ত্রী খরচ না করায় খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না বিজেপি বিরোধীরা। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী এদিন কটাক্ষ করে বলেন, ” কেন্দ্র সরকারের দুই অস্ত্র নাগরিক আইন, এনআরসি এখন ঘুমাচ্ছে। ভোট এলে জাগবে। তখন এই অস্ত্রের ভয় দেখানো হবে। আমি একথা আগেও বলেছি।”
তিনি আরও বলেন, “ওই বিষয়টি অমিত শাহের জন্য মোদি রেখে দিয়েছেন। ২০১৯ সালে আইন পাশ হয়ে গিয়েছে। যদি হওয়ার থাকত তাহলে এতদিনে হয়ে যেত।” রাজ্যে এই আইন চালু হতে দেবেন না বলে অহরহ তোপ দাগেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একযোগে দাবি করেন, ” সিএএ নিয়ে যা বলবার অমিত শাহ তো বলেই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবার নতুন করে কী বলবেন?”
ছবিঃ কৃষ্ণনগরের সভায় তার হাতে এই স্মারক ছবি তুলে দেন রাজ্যের বিজেপি নেতারা। ছবিঃ নরেন্দ্র মোদীর ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহিত