সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তাঁর জন্মস্থান মুর্শিদাবাদ ছেড়ে তিনি কোথাও যাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন অধীর চৌধুরী। শনিবার দিল্লির বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা স্পষ্ট করেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন দলের নেতারা যাই দাবি করুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বাংলার ফলাফল নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি দাবি সূত্রের। বরং জয়রাম রমেশ, কে সি বেণুগোপালরা বলেছেন ফলাফলের ময়না তদন্ত করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে তারাই বিষয়টি দেখবেন বলে আপাতত স্থির হয়েছে।

তবে বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে হারাতে সব রকমভাবে চেষ্টা করেছিলেন বলে ফের একবার সংবাদমাধ্যমে সরব হয়েছেন অধীর। চাঁচাছোলা ভাষায় তাঁকে আক্রমণ করেন সাংবাদিক সম্মেলনে। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমি মুর্শিদাবাদে জন্মেছি। হিন্দু মুসলমান সকলকে শ্রদ্ধা করে জীবনে বড় হয়েছি। আমার আদর্শ নীতই ভোটে হেরে যাওয়ার জন্য বদলাবে না।” তবে মুখ্যমন্ত্রী যে ‘ভয়ংকরী দাঙ্গাকারী’ তা সময়ে প্রমাণ করে দেবেন বলেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ শূন্য কংগ্রেস সাজাবে কে?
রামনবমীকে কেন্দ্র করে শক্তিপুরে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার জেরে হিন্দুরা অধীর চৌধুরীর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় বহরমপুরের আসনে তিনি চলতি লোকসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন সংবাদমাধ্যমে।
এদিকে অধীর চৌধুরী সংসদীয় নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানান মহলে। একাংশের ধারণা অধীর চৌধুরী দিল্লির রাজনীতিতে পা মেলাবেন। যদিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি বহরমপুরের মানুষকে ছেড়ে চলে যাব না। আমি মুর্শিদাবাদের মানুষকে ছেড়ে চলে যাব না। আপনি আমাকে যা খুশি করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমি আমার জায়গাতেই থাকব।”
আরও পড়ুনঃ দ্বন্দ্বের আড়ালে মৈত্রীর কৌশলেই বাজিমাত তৃণমূলের
ঘটনাচক্রে শুক্রবার রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতি তাণ্ডব চলে বহরমপুর কুঞ্জঘাটায় কংগ্রেস কার্যালয়ে। অভিযোগের আঙুল ওঠে তৃণমূলের দিকে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা না হলেও পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যদিও তৃণমূল নেতা পাপাই ঘোষ এই ঘটনায় পাল্টা কংগ্রেসের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন।
প্রসঙ্গত সোনিয়া গান্ধীকে ফের সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন হিসেবে বেছে নিলেন কংগ্রেসের সাংসদরা। শনিবার সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে কংগ্রেস চেয়ারপার্সন হিসেবে সোনিয়া গান্ধীর নাম ঘোষণা করেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। স্বাভাবিকভাবেই কোনও সাংসদ প্রস্তাবের বিরোধিতা না করায় সর্বসম্মতিতেই এই পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন রাজ্য সভার সাংসদ সোনিয়া।
২০১৯ সালে প্রথমবার চেয়ারপার্সন হিসেবে তাঁর নাম মনোনিতি করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সেবার কংগ্রেস বিরোধী দলের তকমাও হারিয়েছিল। মোট আসনের দশ শতাংশ অর্থাৎ ৫৫ জন সাংসদ থাকলে যে কোনও দল বিরোধী দলের তকমা পাবে লোকসভায়। কিন্তু চলতি বছর কংগ্রেসের ৯৯ জন সাংসদ বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন বাছার পাশাপাশি কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা সংসদে তাঁদের বিরোধী দলনেতা বেছে নেওয়ার জন্যও একইদিনে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে বাংলা থেকে দীপা দাসমুন্সী ও অধীর চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। সদস্যরা রাহুল গান্ধীকেই নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। যদিও রাহুলের স্পষ্ট মত মেলেনি। ওই বৈঠকে তার স্পষ্ট কোনও মত দেননি।