বহরমপুরে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদে রাত দখল মেয়েদের

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়াই ১৪ অগস্ট বহরমপুর শহরে রাত জাগলেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা। বছর পেরিয়ে গিয়েছে, আরজিকর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক হত্যার আজও বিচার হয়নি। মেয়েরা সমাজে আজও নিরাপত্তাহীন। ছবি আঁকা, গান, নাচ, নাটক আবৃত্তিকে হাতিয়ার করে তারই প্রতিবাদ করলেন শিল্পী, অভিনেতারা। বহরমপুর টেক্সটাইল কলেজ সংলগ্ন ‘চৌতারা’র সামনের মঞ্চ হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদী মঞ্চ।

বছরখানেক আগে এক তরুণী চিকিৎসকের হত্যা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল রাজ্য। তাঁর আঁচ পড়েছিল গোটা দেশে। সাধারণ মানুষের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বহরমপুর বারাকস্কোয়ার ও তার আশপাশে গত বছর ১৪ অগস্ট রাতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। গত এক বছরে শুধু কি আরজিকর ? বাংলার প্রায় প্রতিটি কোণায় কোণায় ঘটেছে নারী নির্যাতন। ধর্ষণের হাত থেকে বাদ যায়নি নাবালিকাও। নির্বাচনের বলি হতে হয়েছে পলাশীর তামান্না খাতুনকে। অথচ কোথাও বিচার পাননি নির্যাতিতারা।

তারই প্রতিবাদে অদলীয়ভাবে গড়ে ওঠা মূলত ‘রাত দখলের মেয়েরা’, ‘আরজিকর আন্দোলনের সহযাত্রী’ ও ‘আমরা যারা রাজপথ ছাড়িনি’র মতো তিনটি গোষ্ঠী বহরমপুরে “অভয়ার বিচারহীন এক বছর” শিরোনামে একটি কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বলে জানান অন্যতম উদ্যোক্তা সীমা সরকার। চলতি মাসের আট তারিখ সন্ধ্যায় প্রতিবাদীদের একটি মশাল মিছিল শহর পরিক্রমার মধ্য দিয়ে সেই কর্মসূচির সূচনা হয়। পরের দিন আলোচনা সভা ও বিকেলে রাখি বন্ধনের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। ১৪ অগস্ট ছিল সেই কর্মসূচির শেষ দিন। যদিও গতবছরের মতো এবছর সাধারণ মানুষের রাত দখলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়বার মতো কম।

সীমা বলেন, “মানুষ হতাশ। কী হয়েছে প্রতিবাদ করে? কিছুই তো হল না। এইসব প্রশ্নেই নিজেদের আটকে রেখেছেন। তাই এই কর্মসূচি থেকে দূরেই থেকেছেন তাঁরা।” যদিও রাজনীতি এসে সাধারণ মানুষের স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদকে গুলিয়ে দিয়েছে বলে মানুষজন দূরে থেকেছে বলেও পাল্টা মত রয়েছে শহরবাসীর। সীমা অবশ্য বলেন, ” এই আন্দোলন আমরা অরাজনৈতিক নয়,অদলীয়ভাবে করতে চেয়েছি।” যদিও এদিন বামপন্থী দলগুলির একাধিক সংগঠনের প্রত্যক্ষ সদস্যদের উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসী। তাঁদের অনেকেই রাজনৈতিক দলের সংশ্রব এড়িয়ে যেতে চাইছেন। সীমা অবশ্য বলেন, ” লড়াইয়ের পথ বড় দীর্ঘ। আর পথই প্রতিবাদের সম্বল। লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। শাসকের বিভেদের কৌশলকে জিতিয়ে দিলে চলবে না।”

তবে শহরবাসীর একাংশের এই প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী সহ অন্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights