বিদ্যুৎ মৈত্র, মুর্শিদাবাদঃ এক্সিট পোল রায় দিয়েছে গতকাল। ভাগবাটোয়ারা করে দেখিয়েছে বাংলার ৪২-এ কার দখলে ক’টা আসন থাকবে। বিজেপি’র ভাগে থাকবে বেশি। তুলনায় কম আসন পাবে তৃণমূল। বাম-কংগ্রেস জোট পাবে সর্বোচ্চ ৩টি। আর তা নিয়ে নিরন্তর কাঁটা ছেঁড়া চলছে সমাজের সবস্তরে।
তবু বহরমপুর আসনটি নিজেদের ভাগে থাকবেই একথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না শাসকদলের নেতা, বিধায়করা। এমনিতেই ‘বহিরাগত’ ইউসুফ পাঠানকে প্রাথমিকভাবে দলের একাংশের মেনে নিতে না পারা, দ্বিতীয়ত ভরতপুরের বিধায়কের বিতর্কিত মন্তব্য সব মিলিয়ে ইভিএমে কোন বোতামে বেশি চাপ পড়বে তা নিয়ে ঘাসফুল শিবির প্রথম থেকেই ছিল দোদুল্যমান।
মানুষের কাছে নাগাড়ে সরকারি প্রকল্পের প্রচার করে ভোট নিজেদের পক্ষে টানবার চেষ্টাও করেছেন বহরমপুর সংগঠনের একটা বড় অংশের তৃণমূল নেতারা। তার প্রভাবও পড়েছে। দৌলতাবাদ, গুরুদাসপুর, ছয়ঘড়ির একাংশ ভোটারের দাবি, “তৃণমূল তো আমাদের ঘরবাড়ি, রেশন থেকে মেয়েদের হাতে টাকা দিয়েছে। তাকে ভোট না দিলে বেইমানি হবে যে।” তেমনি অন্য অংশের মানুষ বলছেন “এ তো পঞ্চায়েত ভোট নয়। অধীরদা ছাড়া অন্য কাউকে ভোট দিলে চলবে?” নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাসকদলের এক প্রতিনিধি বলছেন, “চৌধুরীই এগিয়ে থাকবে বহরমপুরে।”
“মানুষ মুখে যা বলছে তা যদি ইভিএমে পরে তাহলে আমাদের জেতা নিশ্চিত। কিন্তু তাদের মনের ভেতরে ঢোকা তো সম্ভব নয়। সেই কারণে চার তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।” মন্তব্য নওদার বিধায়ক সাহিনা মমতাজ বেগমের। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, “নওদায় কংগ্রেস অনেক বেশি লিড পাবে।”
রেজিনগরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের বহরমপুর সংগঠনের চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী বলছেন ” আমার এখান থেকে তৃণমূল পনের হাজার ভোটে লিড পাবে।” কোন হিসেবে? “মানুষ তৃণমূলের পক্ষে। আমরা জানি কোন বাড়ির লোক কোন দলকে পছন্দ করে সেই হিসেবেই বলছি তৃণমূল এখান থেকে জিতবে।” কিন্তু বহরমপুর লোকসভা আসন তৃণমূলের পক্ষে যাবে কিনা তা অবশ্য তিনি জোর দিয়ে বলতে পারছেন না। বলছেন ” লক্ষণ ভাল ঠেকছে না। কিছু জায়গায় শেষের দিকে আমাদের ভোটটা ভাগ হয়ে না গেলে হয়ত নিশ্চিত বলতে পারতাম আমরাই জিতছি।” আর এক তৃণমূল নেতা বলেন, “চেয়ারম্যানেরই আস্থা নেই আমরা কী বলব। শুনছি ওঁর বুথেই কংগ্রেস লিড পাবে।”
বুথ ফেরত সমীক্ষায় অবশ্য গুরুত্ব দেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিন তাঁর দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের দাবিতেই ভরসা রেখেছেন বেশি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বুথ ফেরত সমীক্ষার সমালোচনা করেছেন। রবিবার বিকেলে ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফলাফল যাই হোক গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের কেউ যাতে কাউন্টার না ছাড়ে সে ব্যাপারের কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।