সংবাদ প্রতিনিধি, মুর্শিদাবাদঃ একদিকে নিম্নচাপের দরুণ টানা বৃষ্টিপাত ও অন্যদিকে বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে দ্বারকা, ময়ুরাক্ষী, কুঁয়ে নদীতে জল বেড়েছে। তারফলে বন্যার চেহারা নিয়েছে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে। একইসঙ্গে নদীর দু-পারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।মঙ্গলবার সেই বন্যা দুর্গত এলাকার মধ্যে পুরন্দরপুর এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন খড়গ্রামের বিধায়ক আশিস মার্জিত, তৃণমূলের খড়গ্রাম ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য শাশ্বত মুখোপাধ্যায়রা। সঙ্গে ছিলেন পূর্ত দফতরের কার্যনির্বাহী ইঞ্জিনিয়র মানস কুমার সাহা।
কান্দির পুরন্দরপুর ও খড়গ্রামের ধামালী পাড়া, মহারাজপুর, মন্ডলপুরের মতো একাধিক গ্রামকে দু’ভাগ করেছে কানা ময়ুরাক্ষী। আর দুই গ্রামকে জুড়তে গ্রামবাসীরা বাঁশের সেতু তৈরি করেছেন। সেই সেতুই দু’পারের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তাই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে নদীর দু’পারের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পাকা সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন। বিশেষ করে এই বাঁশের সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে এক পড়ুয়ার মৃত্যুর পর পাকা সেতুর দাবি জোরাল হয়েছে। কিন্তু তাঁদের দাবি, প্রতিশ্রুতি মিললেও গ্রামবাসীর দাবির এক আনাও মানেননি জনপ্রতিনিধিরা। তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। দুর্যোগের দিনে তা আরও কয়েকগুণ বেড়েছে বলে দাবি তাঁদের।
এ বছর লোকসভা নির্বাচনে এই এলাকায় ভোট চাইতে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখেও পড়েছিলেন খলিলুর রহমান। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গত ভোটেও সেতুর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন খলিলুর। কিন্তু ভোটে জিতে আর এমুখো হননি সাংসদ। কিন্তু এবার কোনওক্রমে মুখ বাঁচিয়ে এসে ওই এলাকায় সেতুর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করবার জন্য ঘনিষ্ঠ বৃত্তেও আলোচনা সেরেছেন খলিলুর। এর আগে পূর্ত দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা এলাকা মেপে গিয়েছিলেন খলিলুরের অনুরোধে। তাঁরা ফিরে গিয়ে দফতরের শীর্ষ কর্তাদের যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন সূত্রের দাবি তার ভিত্তিতেই এদিন এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন পূর্ত দফতরের কার্যনির্বাহী ইঞ্জিনিয়র।
শাশ্বত বলেন, ” এই সেতু নির্মাণ হলে নদীর এপারের ওপারের মানুষের উপকার হবে। কংগ্রেসের প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আমলেও এই সেতু নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল সেই সময়েও হয়নি। বামফ্রন্টের ৩৪ বছরে তো কিছু হয়নি। এবার তো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেখা যাক।” তবে কান্দির কংগ্রেস নেতা সফিউল আলম খান বলেন, “এগুলো আইওয়াশ ছাড়া কিছু নয়। আসলে লোকসভা ভোট নিয়ে পাঁচ বছর আগে কেটে পরেছিলেন খলিলুর সাহেব। এবার গ্রামের মানুষ ভোট চাইতে গেলে ঝাঁটা দেখিয়ে তাকে বিদেয় করেছিল। তাই এই বন্যার দুরাবস্থার সুযোগ নিয়ে সেতুর গাজর হাতে এলাকাবাসীর কাছে ছুটে গিয়েছেন মান বাঁচাতে। কাজের কাজ কিছুই হবে না।” তিনি দাবি করেন ” ওই এলাকায় দুটি সেতু কংগ্রেসের আমলে তৈরি হয়েছে। ভবানীপুর অঞ্চলে অধীর চৌধুরী লক্ষীনারায়ণপুর যাওয়ার জন্য সেতু তৈরি করেছিলেন ২৮ লক্ষ ২৯ হাজার টাকায়। প্রণব বাবু বালিয়া সেতু নির্মাণ করেছিলেন যখন, তখন ওরা কোন দলে ছিল জিজ্ঞাসা করুন।”