
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূল নেতা ও জমি-বাড়ির কারবারি প্রদীপ দত্তকে খুন করতে ১২ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছিল ভাড়াটে খুনিকে। পুলিশি তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। এমনকি ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, পুজোর আগেই প্রদীপকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার ছক কষা হয়েছিল। বাদ সেধেছিল পিঠে ভাগ। বিশেষ সূত্রে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সংবাদ হাজারদুয়ারির ডেস্কে।
এবছর লক্ষ্মী পুজোর দিন সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে নিহত হন প্রদীপ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ প্রথমে বুবাই দাস নামে এক পুরকর্মীকে গ্রেফতার করে। সে খুনিদের ইনফর্মার হিসেবে কাজ করত। পরে ভিন রাজ্যে হানা দিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে আকাশ দত্ত নামে আর এক যুবককে। আকাশই বাইক চালিয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিল বলে পুলিশ জানায়। এই খুনের ঘটনায় মূল আততায়ী এখনও অধরা। পুলিশ তাকে চিহ্নিত করতে পারলেও সে এখনও পুলিশের জালে ধরা পড়েনি। তবে ধৃত দু’জন রাধারঘাটের বাসিন্দা প্রদীপের প্রতিবেশী বলেই দাবি পুলিশের।

সূত্রের দাবি, প্রাথমিকভাবে দুষ্কৃতিদের প্রদীপকে চিনিয়ে দেওয়ার কাজে বুবাই দাসকে কুড়ি হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল ষড়যন্ত্রকারী। কিন্তু ওই অল্প টাকায় সে রাজি না হওয়ায় পুজোর আগে আটকে যায় প্রদীপ খুনের নীল নক্সা। মাস খানেক দর কষাকষি শেষে এক লক্ষের পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকায় নিমরাজি হয় বুবাই। বাইক চালক হিসেবে দু-লক্ষ টাকা রফা হয় আকাশের সঙ্গে। বাকি টাকা মূল আততায়ী নিজের জন্যে রেখে দেয়।
জমি জমার ভাগ বাঁটোয়ারাই প্রাথমিকভাবে খুনের অন্যতম কারণ হিসেবে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। মূল আততায়ীর বিরুদ্ধে একাধিক খুনের অভিযোগও রয়েছে। এই ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে শাসকদলের এক রাঘব বোয়াল জড়িত থাকার কথা উঠে আসে ঘটনার পরপরই। সূত্রের দাবি, ব্যবসা সংক্রান্ত মোটা টাকা নিয়ে প্রদীপ ও ওই নেতার বিবাদ গিয়েছিল জেলার প্রাক্তন এক পুলিশ কর্তার কানেও। স্বাভাবিকভাবে প্রদীপকে বাঁচিয়ে রেখে ঝুঁকি নিতে চায়নি সে। এখন ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল মাথাকে ধরতে চাইছে পুলিশ। তবে শাসকদলের কোনও বড় মাথা জড়িত থাকলে পুলিশ তাকে ছুঁতে পারবে না বলেই শাসক বিরোধী শিবিরের দাবি।
কারও নাম না করে সোমবার বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ” ভাগীরথীর ওপারে এক পরিবারের দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্বের শিকার প্রদীপ দত্ত। ভাড়াটে খুনিকে পুলিশ জিজ্ঞাসা করলেই পেয়ে যাবে।”