
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ঘুমের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হলেন ঠিকাদার সহ মুর্শিদাবাদের সাত জন শ্রমিক। সোমবার রাত দেড়টা থেকে দুটোর মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাঙ্গালুরুর বিদ্রীর মাইসোর লেবার কলোনীতে। আহত শ্রমিকদের ছ’জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর নগরাজোল টিকটিকি পাড়ায়। আর এক জনের বাড়ি হরিহরপাড়া থানা এলাকায়। তাঁরা সকলেই কোম্পানির দেওয়া ঘরে থাকতেন। সেখানেই থাকা খাওয়া করতেন। সোমবার গভীর রাতে গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে গুরুতর আহত হন ওই সাত জন। বর্তমানে তাঁরা বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহতদের নাম মিনারুল সেখ, জিয়াবুর সেখ, তাজিবুল সেখ, হাসান মল্লিক, নুর জামাল সেখ, সফিজুল সেখ ও জাহেদ আলি। জাহেদ হরিহরপাড়ার খিদিরপুর বারুইপাড়ার বাসিন্দা। এদের মধ্যে একুশ বছর বয়সী নুর জামালের দেহের ৩৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। শরীরের ৭৬ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে জাহিদ উল আলীর।

আহত ও অন্যদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, নির্মাণ সংস্থা সানসাইন সিগনেচার ডেভলপারের কর্মী আহতরা। তাঁরা থাকতেন ব্যাঙ্গালুরুর বিদ্রীর মাইসোর লেবার কলোনীতে এলাকায়। নতুন গ্যাস সিলিন্ডার লাগিয়ে রান্না করার পর খাওয়া দাওয়া সেরে নেন তাঁরা। পরে দরজা জানালা লাগিয়ে শুয়ে পড়েন। মাঝরাতে তাঁদের একজন গ্যাস লাইটার জ্বালালে এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে যায়।
ঠিকাদার হাসান মল্লিক বাকিদের গত ছ’মাস আগে বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে নিয়ে গিয়েছেন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন হাসানও। হাসানের স্ত্রী ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরু পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁদের দেখতে সিটু অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক আসাদুল্লা গায়েনের নির্দেশে হাসপাতালে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য ও মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সদস্য আবদুর জাব্বার ও সংগঠনের নেতা সুমন দাস মহাপাত্র সহ বেঙ্গালুরুর সিটু নেতৃত্বরা।
সুমন বলেন ” এঁরা সংকটজনক অবস্থায় আছেন। পশ্চিমবঙ্গের সরকার যেন কর্ণাটকের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এঁদের সু- চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তির এমন ঘটনায় পরিবার যেন মুখ থুবড়ে না পরে তার জন্য আর্থিক সাহায্য সহ সবরকমের সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।” ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছেন ওই সংগঠনের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক কামাল হোসেন।
রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে দাবি করে তিনি আরও বলেন ” এলাকায় কাজের অভাবে ওরা বাড়ি ছেড়েছে বাধ্য হয়ে। রাজ্য সরকারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের অতিদ্রুত সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি ওদের সুস্থ জীবনের কামনা করি। ওরা যেন জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে।” আহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বাম যুব সংগঠনের জেলা নেতারা। ফোন করে খোঁজ নেন তৃণমূলের বহরমপুর ব্লকের সভাপতি আইজুদ্দিন মন্ডলও।