মৃত তারকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা তৃণমূলের, কলোনির দাবি স্থায়ী ঠিকানার

Social Share
মন্ত্রী চন্দ্রিমা কথা বলছেন মৃতের স্ত্রীর সঙ্গে, উপস্থিত আছেন নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ও।

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দিন চারেক বহরমপুরের গান্ধী কলোনির বাসিন্দা বছর ৫৪-র তারক সাহার অপমৃত্যু হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে লেগেছে এসআইআর (Special Intensive Revision)-র দাগ। রবিবার মৃত তারকের স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে দেখা করলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়, তৃণমূলের বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি অপূর্ব সরকার ও দলের অন্যরা।

এদিন মন্ত্রী অবশ্য বলেন, তাঁরা সরকারিভাবে নয়, দলীয়ভাবে মৃত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। দলের পক্ষ থেকে মৃতের পরিবারকে মোট তিন লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে বলে জানা যায়। বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, “ওই পরিবারকে সবার জন্য ঘর প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।”

বহরমপুর পুরসভার অধীন গান্ধী কলোনির বাসিন্দা তারক, মশলা মুড়ি বিক্রি করে সংসার চালানোর আগে রিক্সা চালাতেন। তাঁর স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করেন। এক ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী। মৃতের মেয়ে এসআইআরের জন্য ২০০২ এর তালিকায় তাঁর নাম খুঁজে না পেয়ে বাবাকে দেখতে বলে। বাবা তারকও তালিকায় মেয়ের নাম খুঁজে না পেয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন ও নিজের জীবনে চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন বলে দাবি তারকের স্ত্রী’র। সেই দাবিতে সিলমোহর দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিয়েছেন চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, ” এই ভয়ের পরিবেশ থেকে মানুষকে মুক্ত করতে কমিশনের কোনও প্রচার নেই।”

বিজেপি’র বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি মলয় মহাজন বলেন, ” করোনায় মৃত্যু হলে এই তৃণমূল বলতো করোনায় মরেনি, ডেঙ্গিতে মৃত্যু হলে বলে ওই রোগে কেউ মরে না। আর এখন যা মৃত্যু হচ্ছে সব এসআইআরের কারণে মৃত্যু হচ্ছে। এসআইআর কারও মনে আতঙ্ক তৈরির জন্য হচ্ছে না। বরং তৃণমূল নিজেকে বাঁচাতে এদেশের মানুষদের মধ্যে এসআইআর আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে।” তৃণমূলের মন্ত্রীকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে মলয় বলেন, ” বাংলাদেশি, রোহিঙ্গারা এখানে এলে দিদির দৌলতে স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে যাচ্ছে। আর এই গঙ্গার ধারের মানুষগুলো বছরের পর বছর প্রকৃতির সঙ্গে যুঝে নিজেদের টিকিয়ে রাখছে। অথচ এদের স্থায়ী করার চিন্তা কেন নেই তৃণমূলের?”

একই দাবি করেন গান্ধী কলোনীর বাসিন্দারাও। তাঁদের দাবি, ” আমাদের ভোটের গ্রহণযোগ্যতা আছে। কিন্তু আমাদের স্থায়ী ছাদ চাওয়ার অধিকার নেই। কে আর কবে ভেবেছে আমাদের কথা।” কংগ্রেসের জমানা পেরিয়ে বহরমপুর পুরসভা এখন তৃণমূলের। দুয়ারে দাঁড়িয়ে বিজেপি। কলোনির বাসিন্দাদের দাবি, ” আমাদের একটাই উঠোন বেড়া দিয়ে আলাদা করা আছে তাই দেখতে পৃথক লাগে। যে ঘরে ভাত ফোটে তার পাশেই শৌচালয়। এ কথা সবার জানা।” নাড়ুগোপাল বলেন, ” ওই কলোনীর জমি সেচ দফতরের। গঙ্গার তীর থেকে ৭৫ মিটারের মধ্যে বাড়ি হবে না। ওরা যদি চায় অন্য কোথাও জমির পাট্টা দেওয়া যেতে পারে। বাসস্থান করে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কখনোই উচ্ছেদ করে কিছু হবে না। কারণ, বস্তি উচ্ছেদ আমাদের দলের নীতির বিরুদ্ধে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights