তৃণমূলের পর জুয়ার আসর থেকে ধৃত এক বিজেপি নেতা ও তাঁর স্বজন

Social Share
ধৃতদের আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বহরমপুরে এক জুয়ার আসর থেকে গ্রেফতার হয়েছিল তৃণমূল নেতা। আর তা নিয়ে পদ্ম শিবির গোটা তৃণমূল দলকেই দুয়ো দিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছিল। বছরও ঘুরল না, কালীপুজোর আগে জুয়ার আসর থেকে ধরা পড়ল এক বিজেপি নেতা। হরিহরপাড়া থানার পুলিশ ওই বিজেপি নেতাকে আজ আদালতে পাঠায়।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হরিহরপাড়া থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চোয়া আমবাগান এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযোগ, ওই এলাকায় বিজেপির এক জেলা নেতা নিজের বাগান বাড়িতে জুয়ার আসর বসিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায় করিমপুর ও বহরমপুর এলাকা থেকে জুয়ারিরা সেই আসরে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ আসরে হানা দিতেই যে যার মতো পালিয়ে যায়। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।

ধৃতদের নাম বিশ্বজিৎ মল্লিক ওরফে গোপী , চিন্ময় বিশ্বাস, এবং সুব্রত বিশ্বাস। বিশ্বজিৎ বিজেপি’র নেতা বলে এলাকায় পরিচিত। চিন্ময় ওই বিজেপি নেতার ভাই বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। জুয়ার আসর থেকে পুলিশ ৩৬ হাজার ১০০ টাকা সহ মদের বোতল, তাস, মোমবাতি,সহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে জুয়া সংক্রান্ত ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই আমবাগান এলাকায় এর আগেও গোপনে জোয়ার আসর বসার অভিযোগ উঠেছিল। তবে এবার সরাসরি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম জড়ানোয় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সমগ্র এলাকায়।ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি পলাতক জুয়ারিদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

চলতি বছর ২২ জুলাই জুয়ার ঠেক থেকে বলাই দত্ত নামে এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছিল বহরমপুর থানার পুলিশ। বলাই তৃণমূলের মণীন্দ্রনগরের অঞ্চলের সভাপতি। তাঁর বাড়িতেই বসেছিল জুয়ার আসর। তিন মাসের মাথায় এবার গ্রেফতার বিজেপি নেতা। হরিহরপাড়া থানা বিজেপি’র মুর্শিদাবাদ সংগঠনের আওতাধীন। মুর্শিদাবাদ সংগঠনের সভাপতি সৌমেন দত্ত বলেন, “আপনার কাছে ভুল তথ্য আছে। ওই নামে কেউ আমাদের দলে নেই।” অথচ বিশ্বজিৎকে এলাকার মানুষ বিজেপি’র চোয়া মন্ডলের সভাপতি হিসেবেই চেনেন। তৃণমূলের বিধায়ক নিয়ামত শেখ অবশ্য বলেন, ” আইন আইনের পথে চলবে।” 

তৃণমূল ও বিজেপি কয়েনের এপিঠ ওপিঠ বলে দাবি করেন সিপিএম সহ বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী রাজনৈতিক দল। কংগ্রেসের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ” এক বৃন্তে দুটি ফুল, ঘাস আর পদ্ম ফুল। সেটিংয়ের নাম বিজেপি আর তৃণমূল। ইতিমধ্যে মানুষকে এপ্রিল ফুল বানিয়েছে। আগামীদিনেও বানানোর চেষ্টা করছে। এই দুই ফুল থেকেই সাবাধান হতে হবে মানুষকে।” এদিন আর এসপি’র জেলা সম্পাদক নওফেল মহম্মদ সফিউল্লা বলেন ” মাস কয়েক আগে বহরমপুরে বুকে দেখেছি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে জুয়ার আসর থেকে গ্রেফতার হতে। এবার বিজেপি নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করল জুয়ার আসর থেকে। এই কারণেই আমরা বলি ভারতবর্ষে যতো দুষ্কৃতি, দুর্নীতি সিন্ডিকেট আছে তার মাথা বিজেপি। আর পশ্চিমবাংলায় আছে তারই ফটোকপি তৃণমূল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights