
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এমন হওয়ার কথা ছিল না। কথা ছিল ছাত্র পরীক্ষা দিতে আসবে, আর তিনি হবেন সে পরীক্ষার পরিদর্শক। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন ৯ বছর পরে ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল শিক্ষককে ফের পরীক্ষার্থী হিসেবে হলে পাঠাল রবিবার। যা মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না বহু ‘যোগ্য’ শিক্ষক।
রবিবার স্কুল সার্ভিস কমিশন আয়োজিত নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার হলে বসে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে বহু ‘বাতিল’ শিক্ষকের। তেমনই বহরমপুর গোরাবাজারের এক পরীক্ষাকেন্দ্রে সেই শিক্ষককে তাঁরই এক ছাত্রী প্রশ্ন করেন “আপনি এখনও স্কুলে যান?”, “আপনি এখনও বেতন পাচ্ছেন?” এর মতো বিব্রতকর প্রশ্ন। যা শুনে পাল্টা ওই ‘বাতিল’ শিক্ষককে বলেন ” হ্যাঁ আজও শিক্ষক আছি। কালকেও স্কুলে যাব। এবং সরকার বেতনও দিচ্ছে।”
চুয়াপুরের এক পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরেও ঘটেছে এমনই ঘটনা। নতুনদের চেহারায় তাঁদের শিক্ষক তূল্য বাতিল শিক্ষকদের প্রতি ছিল উদাসিনতা, যা মরমে আঘাত বলছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। এরজন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছেন তাঁরা। এবার প্রশ্নপত্র সহজ হওয়ায় অনেকেই মুড়ি মুড়কির একদর নিয়ে দোটানায় পড়েছেন।

বহরমপুরের সব স্কুলেই বাতিল শিক্ষক যাঁরা অ্যাডমিট কার্ড পেয়েছিলেন তাঁদের তালিকা ধরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। সেই তালিকা অনুসারে বহরমপুরের পরীক্ষাকেন্দ্রে কোথাও একজন, কোথাও তিনজনের নাম ছিল। কিন্তু তাঁদের কেউ পরীক্ষা দিতে আসেন নি বলেই প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।
কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায় রবিবারের পরীক্ষা উতরে স্বস্তিতে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) দীননারায়ন ঘোষ বলেন, ” কোথাও কোনও অসুবিধা হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল।” মুর্শিদাবাদ জেলায় রবিবার ৫৮টি পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রায় ২৭ হাজার ৫০০ জন স্কুল শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা দেবেন। বহরমপুরে ২৩টি, ডোমকলে আটটি, কান্দিতে ৬টি, জঙ্গিপুরে ১২টি, লালগোলায় ৯টি স্কুল কলেজকে পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে বাছা হয়েছিল।
কমিশনের নির্দেশে সতর্ক থাকতে পরীক্ষার্থীকে কোমরের বেল্ট, হাতের ধাগা, চুরি, গলার মালা, পর্যন্ত খুলে ফেলতে বাধ্য করেছিলেন পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের কর্তারা। তবে কঠোর নিয়মকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে সরকারের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আসা অভিভাবক কিংবা বন্ধু-বান্ধবরা। বেলডাঙার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম এদিন বলেন, ” এগুলো ওপরের বাঁধন।” পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, “তলায় তলায় ঘুষের বিনিময়ে চাকরির সেটিংসের কথা ২০১৬ এর পরীক্ষার দিন জানতেন?”
পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও স্ত্রীকে সাবেক কেএনকলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে রেখে ভাকুড়ি ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে স্বামী মনিরুল ইসলামের। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একটি লছিমন গাড়ি ধাক্কা মারে বাইক আরোহি মনিরুলকে। গুরুতর আহত মনিরুলকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া বহরমপুরে।