কংগ্রেসের জেলা নেতা হলেন লালবাগের অর্ণব

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্রঃ দিন পনেরো আগে মুর্শিদাবাদের শহর কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে অর্ণব রায়কে সরিয়ে অনিরুদ্ধ ঘোষকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন অধীর চৌধুরী। নবাবের শহরে রটে যায়, অর্ণবের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে অধীর চৌধুরী তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন। বাম-কংগ্রেস জোট বিরোধী কংগ্রেসীদের কেউ কেউ রটিয়ে দিলেন ” দলের বিরুদ্ধে গিয়ে সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষের সঙ্গে জোটের শলা করেন মাস্টার। ঠিকই আছে দাদা সরিয়ে দিয়েছেন।”

বছর চারেক আগে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মুখেও বিতর্কে তাঁর নাম জড়িয়েছিল। সেবার শহর তথা জেলা জুড়ে রটে গিয়েছিল কংগ্রেস ত্যাগী শাওনি সিংহরায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন অর্ণব রায়। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা তখন প্রায় অপরিচিত মুখ নিয়াজুদ্দিন শেখকে প্রার্থী করে ভোট যুদ্ধে নেমেছিলেন।মুখে না বললেও গোঁসা হয়েছিল অর্ণবেরও। তৃণমূল আর বিজেপি’র হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট হারিয়ে তিন নম্বরে নেমে এসেছিল কংগ্রেস।

সেই অর্ণবকেই অধীর নির্দেশে এবার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য হিসেবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র দিলেন মনোজ চক্রবর্তী। শহর থেকে দলের জেলা দায়িত্বে এসে অর্ণব বললেন, ” প্রাইমারি থেকে হাইস্কুলে পাঠালেন দাদা। তাঁকে ধন্যবাদ।”

ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের দল তৈরি করতে নেমেছেন অধীর চৌধুরী। একদিন যে জেলা অধীর গড় হিসেবে পরিচিত ছিল আজ সেই জেলায় তৃণমূলের রমরমা। যদিও ঘাসফুলের অন্দরে আজও সযত্নে লালিত হাত। এমন দাবি সরাসরি উড়িয়ে দিতে পারেন না তাবড় তৃণমূল নেতাও। আর সেই দুর্বলতাই কংগ্রেসকে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে অক্সিজেন জোগাবে বলে ধারণা একাংশ কংগ্রেস নেতারা। সেই যুদ্ধে অর্ণব রায়ের মতো নেতারাই অধীর সেনা, দাবি একাংশ কংগ্রেস কর্মীর।

আরজিকর হাসপাতালে কর্মরত তরুণী চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডকেস্মরণে রেখে জনসংযোগের লক্ষ্যে লালগোলায় প্রতি মাসে অর্ণবের উদ্যোগেই বসে তিলোত্তমা ক্লিনিক। চলতি মাসে ১৩ তম পর্ব অতিক্রম করেছে। পর্যটকের শহর লালবাগের একাংশ হোটেলে বেআইনি কার্যকলাপ চলে। নাগাড়ে পুলিশের রেডে সম্প্রতি বেকায়দায় সেসব। অর্ণবের নেতৃত্বে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে লাগাতার আন্দোলনের ফসল বলে তা দাবি করে শহর মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসে।

অধীরের নির্দেশে আপাতত সেই মুর্শিদাবাদ বিধানসভা এলাকাই অর্ণবের কর্মক্ষেত্র। তবে কি ছাব্বিশের লড়াইয়ে মুর্শিদাবাদে তিনিই মুখ? অর্ণব অবশ্য বলেন, ” মুর্শিদাবাদ আমার বাসস্থানও। তাই জেলার একজন নেতা হিসেবে মুর্শিদাবাদ দেখতে বলার অর্থ এই নয় যে আমি প্রার্থী হচ্ছি। এটা কাজের একটা অংশ। দল নির্বাচনে ভাল ফল করবে। আর তা করতে একজন সৈনিক হিসেবে যা করতে বলা হবে আমি তাই করব। কোনও কিছু পাওয়ার জন্য নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights