বিদায় নয়, আরও বড় পদে মীনাক্ষীকে চায় বাংলা

Social Share
বিদায়ী ভাষণ মীনাক্ষীর, বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃখেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের সমাবেশ প্রমাণ করছে দাঙ্গা শেষ কথা বলে না, ধর্ম শেষ কথা বলে না, শ্মশান কবর স্থান শেষ কথা বলে না, পেটের খিদে আর হাতের কাজ শেষ কথা বলে।” এইভাবে হিন্দি বাংলা মিশিয়ে কখনও স্বর তুলে কখনও নামিয়ে ডিওয়াইএফ এর রাজ্য সম্মেলনের প্রথম দিনের প্রকাশ্য সমাবেশে যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় তখন জমায়েতে গুঞ্জন উঠেছিল এই ভাষণ আর যুবমঞ্চে শোনা যাবে না। কেউ কেউ বলছেন সিপিএমের ঘরে এমন লড়াকু নেত্রী থাকা মানে অন্যদের তুলনায় রাজনীতিতে দু-কদম এগিয়ে থাকা। সেই গুঞ্জন সত্যি করে বিদায় নিলেন মীনাক্ষী। এখন থেকে বাম যুব সংগঠনের ভার বইবেন তাঁরই সহযোদ্ধা ধ্রুবজ্যোতি সাহা। জামির মোল্লার পর ফের ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক হলেন মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্র।

মুর্শিদাবাদকে সিপিএম পাখির চোখ করেছে। একদিকে স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরেও পিছিয়ে পড়া তকমা ঘোচেনি এই জেলার। তারওপর পরিযায়ী শ্রমিকের ঠিকানা তালিকায় সবার ওপরে মুর্শিদাবাদের নাম। স্বাস্থ্যেও তথৈবচ জেলা। সেই খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের মনে জায়গা করতের তৎপর মীনাক্ষী, ধ্রুবরা। ওঁরা মুর্শিদাবাদে সংগঠনের হারিয়ে যাওয়া জমি ফিরে পেতে চেষ্টা শুরু করেছেন সেলিমের হাত ধরে কোভিড পরবর্তী সময় থেকেই। খড়গ্রামের ছেলে ধ্রুবজ্যোতিকে রাজ্য সম্পাদক করে এদিন সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তাই দেওয়া হল দলের পক্ষ থেকে।

নয়া সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি সাহা সহ নির্বাচিত অন্য পদাধিকারিরা রবীন্দ্রসদন মঞ্চে

গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তরে প্রান্তরে যেভাবে এই দুই নেতা-নেত্রী দৌড়ে বেড়িয়েছেন তা যে শিক্ষনীয় যে কোনও উঠতি নেতার কাছে তা স্বীকার করতে দ্বিধা করেন না সিপিএমের পোড় খাওয়া কোনও নেতা। তবে ভোটের অঙ্কে সিপিএম এখনও পিছনের সারির ছাত্র। মীনাক্ষীর হাত থেকে ধ্রুবজ্যোতি যখন ব্যাটন তুলে নিচ্ছে সংগঠনের, সেই সময় কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের রায় জানিয়ে দিয়েছে জনতা। জোটসঙ্গী কংগ্রেসের কাবিল উদ্দিন শেখকে তিন নম্বরে পাঠিয়ে জয়ের ধারা অব্যহত রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলিফা আহমেদ। এই হার ভাবালেও ২০২৬ এর নির্বাচনে সমীকরণ বদলাবে বলে বিশ্বাস করেন ইকবাল হোসেনরা। আর সেই সমীকরণ বদলাতে যুবদের লড়াইকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁরা।

শনিবার শুরু হওয়া বহরমপুরে সংগঠনের ২০ তম রাজ্য সম্মেলনের শেষ দিন সোমবার ৯৭ জনের নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে ডিওয়াইএফ। তৈরি হয়েছে ২৫ জনের সম্পাদকমন্ডলী। আর ওই সম্মেলনেই ধ্রুবজ্যোতির জায়গায় বর্ধমানের অয়নাংশু সরকারকে আনা হয়েছে। কলতান দাশগুপ্তের জায়গায় যুবশক্তি পত্রিকার সম্পাদক করা হয়েছে সরোজ দাসকে। ধ্রুবজ্যোতি বলেন, ” পাড়ায় পাড়ায় কাজের দাবিতে যুবদের ব্যারিকেড তৈরি হবে।” অয়নাংশু বলেন ” আমরা একটা টিম হিসেবে কাজ করব।” আর বিদায়ী সম্পাদক ‘ক্যাপ্টেন’ মীনাক্ষী এখন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তাঁর দিকে তাকিয়ে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন গ্রাম বাংলার বাম কর্মীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights