চিটফান্ডের বাজেয়াপ্ত জমিতে পুরসভার নির্মাণ ?

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ জমি নিয়ে ধন্দ থেকেই গেল জঙ্গিপুরে। পুরসভার জমিতে সরকারি নির্মাণ কাজ হচ্ছে বলে পুরপ্রধান দাবি করছেন। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট সেই দাবি মানতে নারাজ। আর এই বিতর্কে ফের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে শুক্রবার। ওইদিন চিট ফান্ডের বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি বেআইনি দখলদারির অভিযোগে জঙ্গিপুর পুরসভার বিরুদ্ধে এফআইআর এর নির্দেশ দিল রোজভ্যালির আমানতকারীদের স্বার্থে হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি। সেই মর্মে রঘুনাথগঞ্জ থানাকে এখনই এফআইআর করতে হবে বলে চিঠি দিয়েছে হাইকোর্ট নিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দিলীপ শেঠ কমিটি।

এর আগে ওই কমিটির তরফে পুরসভাকে চিঠি দিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেআইনিভাবে দখল করা জমির নির্মাণ ভেঙে ফেলতে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরে প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও পুরসভা তাতে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। তাই বৃহস্পতিবার শেঠ কমিটির নোডাল অফিসার জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ও রঘুনাথগঞ্জ থানাকে প্রাথমিক অনুসন্ধান করেই এফআইআর করার জন্য জানিয়েছে। কমিটির চিঠিতে আরও বক্তব্য, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ওই বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তি এখন তাদের হেফাজতে রয়েছে। সেখানে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জবর দখল করার এক্তিয়ার নেই। তারপরেও জঙ্গিপুর পৌরসভা সেই জমি দখল করে নির্মাণ করছে। ওই পুরসভাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা জানানোর জন্য পৌরসভাকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও পুরসভার তরফে কোনোভাবেই কোন যোগাযোগ করা হয়নি। তাই চিঠিকেই এফআইআর হিসেবে ধরে নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কমিটি।

জঙ্গিপুরের বাসুদেবপুর মৌজায় বহু বছর ধরে প্রায় ১৩ শতক জায়গা ফাঁকা পরে আছে। ওই জমি রোজভ্যালি চিটফান্ডের। হাইকোর্টের নির্দেশে সেই জমি এখন বাজেয়াপ্ত হয়ে আছে। সেই জমিতে নমামি গঙ্গে প্রকল্পের কাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। নাগরিকদের বক্তব্য, এমন বিতর্কিত জমিতে কোনো প্রোমোটার নয়, একটা পুরসভা বেআইনি জমি বেআইনি দখলে নেমেছে! তাদের আইন আদালতে কোনো ভয় থাকলে এটা করা সম্ভব আর, মত নাগরিকদের।ওই জমির বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পুরসভা থেকে জেলাশাসক হয়ে নবান্নের কর্তাদের কাছে প্রথম আইনি নোটিস পাঠান ওই সংস্থার আমানতকারীদের আইনজীবী অরিন্দম দাস।

রোজভ্যালির আমানতকারীদের তরফে তিনি নোটিস পাঠিয়ে পৌরসভাকে সতর্ক করে বলেন, এখনই ওই বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করা হোক। কারণ কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর গত প্রায় এক দশক ধরে ওই জমি সহ চিটফান্ডের টাকায় কেনা বেআইনি সম্পত্তি হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটির হেফাজতে আছে।রোজভ্যালি কমিটির নতুন চিঠি প্রসঙ্গে অরিন্দম বাবু বলেন, পুরসভার মতো একটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটা খুব লজ্জাজনক যে বাজেয়াপ্ত করা জমি তারা দখল করে কোন নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে। অথচ তাদের সতর্ক করার পরেও তারা পিছু হটছে না। এটা একটা ঔদ্ধত্য। অথচ আইনের চোখে তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছে। তাই কমিটি এবার চিঠি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই চিঠি অন্য এমন বিতর্কিত জমি দখলদারদের ক্ষেত্রেও একটা সতর্কতা। কারণ গত এক দশকে বহু চিট ফান্ডের বহু সম্পত্তি এইভাবে কার্যত গায়ের জোরে দখল করা হয়েছে বলে আমাদের কাছেও খবর রয়েছে।

এই প্রসঙ্গে পুরপ্রধান মফিজুল ইসলাম বলেন, ” রোজভ্যালির জমির দাগ ১৮৩, আর পুরসভার যেখানে কাজ হচ্ছে তার দাগ নম্বর তিনশো। পুরসভা কোনও বেআইনি কাজ করছে না। একথা কোর্টকেও বলা হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights