
বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ সামনেই নবান্ন। শুরু হবে ধান বেচাকেনা। কান্দি মহকুমায় কীভাবে সেই কাজ সুষ্ঠভাবে ও চাষীর স্বার্থে করা সম্ভব হবে? নব কলেবরে তৈরি হচ্ছে কান্দি মহকুমা হাসপাতাল, সেটি চালু হবে কবে? দীর্ঘদিন ধরে পরে থাকা কান্দি পশু হাসপাতালের ভবিষ্যৎই বা কী? ধামালীপাড়া ঘাটের প্রস্তাবিত সেতুর জন্য যে জায়গা বাছা হয়েছে তা উপযুক্ত কি? কেমনভাবে চলে কান্দি পুরসভার মা ক্যান্টিন? টোটো চালকরা এখনও রেজিস্ট্রেশন শুরু করেননি কেন? সে সব নিজে চোখে দেখে এসে নজরুল ভবনে মহকুমার সমস্ত স্তরের জন প্রতিনিধিদের নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া।
ঘন্টা খানেকের বেশি সময় ধরে চলা প্রশাসনিক বৈঠকে কান্দির রাস্তা-ঘাট, কৃষি, খাদ্য থেকে কান্দি পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও পুরসভা নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এদিন একাধিক আলোচনা হয় জেলাশাসকের। আলোচনায় উঠে আসে পাড়ায় সমাধান কর্মসূচির প্রসঙ্গও। নির্বাচনের মুখে শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে হওয়া এই বৈঠকে শাসকদল তৃণমূল যে খানিকটা মাইলেজ পাবে তা নিয়ে দ্বি-মত নন রাজনীতির কারবারিরা।

যেখানে জল নেই, যেখানে বিদ্যুৎ এখনও পৌঁছায়নি, হয়তো বিদ্যুতের তার পাড়ায় পৌঁচেছে কিন্তু পরিষেবা চালু হয়নি কীভাবে সেই সব সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিধায়করা তাঁদের এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে জানিয়ে অপূর্ব বলেন, ” একাধিক ছোট ছোট বিষয় থাকে যেগুলি স্থানীয় স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না, এদিন সেগুলির সমাধানের রাস্তা বেরিয়েছে আলোচনায়।” সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকের আগে কান্দি মহকুমা হাসপাতালের নতুন ও পুরনো বিল্ডিং পরিদর্শন করেন জেলাশাসক।.১৫৪ শয্যার কান্দির নব নির্মিত ভবনে ডিসেম্বরেই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে বলে জানিয়ে জেলাশাসক বলেন, ” এখানে ডিসেম্বর থেকেই রোগীদের জন্য চালু হবে ই প্রেসক্রিপশন।”
এদিন শাসক দলের তিন বিধায়ক আশিস মার্জিত, অপূর্ব সরকার (ডেভিড) ও হুমায়ুন কবীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। হুমায়ুন ওই বৈঠকে আসবেন কি আসবেন না তা নিয়ে জল্পনা ছিল। কিন্তু সোমবার হুমায়ুনকে নজরুল ভবনে দেখা গেল কান্দি মহকুমার উন্নয়ন সংক্রান্ত জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়ার সঙ্গে দলের অন্য পদাধিকারিদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে। বৈঠকে হুমায়ুনের ডান পাশে ছিলেন কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার ওরফে বাপি, বাম পাশে ডেভিড।

এদিন ডেভিড বলেন, ” জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ছিল। দলীয় কোনও বৈঠক ছিল না। তাই যে কেউ সেখানে যেমন আসতে পারে না, তেমনি বিভিন্ন বিভাগের জনপ্রতিনিধি ছাড়া দলের কেউও আসতে পারে না।” তবে হুমায়ুনের সঙ্গে তাঁর সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে জানিয়ে ডেভিড আরও বলেন, ” সৌজন্য আমাদের পরম্পরা। এটাই বাঙালিয়ানা।” হুমায়ুন বলেন, ” জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলাশাসকের এই বৈঠকে অনেক কিছু মেরামত হল।”
সমাজমাধ্যমে ‘রটেছে’ ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর আর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সে কথা জানাতেই ফোঁস করে ওঠেন হুমায়ুন। পরে অবশ্য শান্ত গলায় বলেন, ” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দলের নাম্বার টু। তিনি লোকসভার সাংসদ। তাঁর সঙ্গে বৈঠক হলে তো সবাই জানতে পারবেন। বিষয় না জানলে কোথায় বৈঠক হলো না হলো তা তো প্রকাশ্যেই আসবে। এগুলো সংবাদ মাধ্যমের অপপ্রচার।”