বিদ্যুৎ মৈত্র, মুর্শিদাবাদঃ এক বাংলা সংবাদমাধ্যমে ২০১৬ সালে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েছিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেবার বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর দল কংগ্রেস প্রথম বামেদের সঙ্গে জোট করে লড়াইয়ে নামার পরিকল্পনা নিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গেই অধীরকে অতীত নিয়ে প্রশ্ন করায় তিনি অতীতকে Cancel Cheque-এর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
৪ জুন,২০২৪। মানুষের রায়ে বহরমপুরে আজ অতীত, সাংসদ অধীর। তাঁর কথায় বললে বহরমপুরের এখন ‘Cancel Cheque’ অধীর। যদিও শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছেন তিনি। শেষদিন পর্যন্ত নিজের লোকসভায় ঘুরেছিলেন। মানুষের মন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ২০২৪-এ মানুষ তাঁকে শূন্য হাতেই ফিরিয়েছে। ২০২১ এর পর ২০২৪। ধুলিসাৎ অধীর গড়। মনোজ চক্রবর্তীর পর অধীর চৌধুরী। বহরমপুরের নতুন প্রজন্ম বেছে নিল তাঁদের নয়া নেতা। সারা বাংলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই প্রথম ঘাসফুল ফুটল বহরমপুরে।

দীর্ঘ ২৫ বছরের সাংসদ অধীর চৌধুরীকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন গুজরাতের ইউসুফ পাঠান। খেলার মাঠের পরিচিত মুখ হলেও রাজনীতির মাঠে যিনি একেবারেই আনকোড়া। সেই ইউসুফকেই সংসদে পাঠালেন বহরমপুরের মানুষ। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার রাজনীতি থেকে সরে এসে একটা লম্বা বিরতির পর শাসকের পক্ষ নিল বহরমপুর। ৮৬ হাজারের বেশি ভোটে জেতালো ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারকে।
২০১৯ এর নির্বাচনে বদলের ইঙ্গিত ছিল। সেবারই পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট কমেছিল কংগ্রেসের। ভোট বাড়িয়েছিল তৃণমূল। তবুও ৪ জুন সকালে এগিয়ে ছিলেন অধীর। কিন্তু বেলা যত গড়াল ততই ভোট রেটে পিছিয়ে গেলেন বহরমপুরের “রবীন হুড”। ছেলেবেলায় সমাজ পরিবর্তনের নেশায় ঘর ছেড়েছিলেন। সেই নেশাই তাঁকে ছুটিয়ে নিয়ে গিয়েছিল দেশের আইনসভায়। নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করে জাতীয় রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে উঠেছিলেন অধীর। সংসদে বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতা থেকে দু’বারের পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান। তাঁকে ভরসা দিয়েছিলেন বহরমপুরের মানুষ। কিন্তু শেষ অঙ্কে বদলে গেল চিত্রনাট্য। ‘ভিনদেশী তারা’র কাছে হারলেন ঘরের ছেলে অধীর। বললেন “আমি হেরেছি মানে হেরেছি।কোনও অজুহাত দিতে চাই না।”
আরও পড়ুনঃ ভগবানগোলা তৃণমূলেরই