বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ নির্বাচন কবে হবে তা ঘোষণা হয়ে গেলেও করা লড়বেন তা কিন্তু ঘোষণা করেনি কেউ। ইদ্রিশ আলী প্রয়াত হওয়ার পর থেকেই হাওয়ায় ভেসেছিল লোকসভা নির্বাচনের হাওয়াতেই হবে ভগবানগোলার বিধানসভা নির্বাচন।
বছর তিনেক আগে সীমান্ত লাগোয়া এই দুই ব্লকের বিধানসভায় প্রার্থী কে হবে তাই নিয়ে শাসকের ঘরের কোন্দল বাইরে এসেছিল। এলাকার পরিচিত মুখ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাগির হোসেনকে ব্রাত্য রেখে বাইরে থেকে আইনজীবি ইদ্রিশ আলীকে প্রার্থী করেছিল দল। সেই নির্বাচন দেখে যেতে পারেননি সাগির হোসেন। নির্বাচনের দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ওই নির্বাচনে ভগবানগোলায় জোড়া ফুল ফুটিয়েছিলেন ইদ্রিশ আলী। তিনিও অসুস্থ হয়ে মাস খানেক আগে প্রয়াত হয়েছেন।
নির্বাচনে লড়তে এসে ভগবানগোলায় একটি কলেজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রয়াত বিধায়ক। এলাকার মানুষের বহুদিনের দাবি ছিল একটি বাসস্ট্যান্ডের। একটি ফায়ার ব্রিগেডের। তৃণমূলে এলাকা প্রধানরা জানালেন, বিধায়ক এগুলোর কিছুই করেননি। ফের উঠেছে স্থানীয় নেতাদের প্রার্থী করার দাবি। রিয়াত হোসেন সরকার, ইমরান হোসেন প্রামাণিক, আবু সুফিয়ান, চাঁদ মহম্মদদের নাম।
এই আবহে আজ মুর্শিদাবাদের বিদায়ী সাংসদ আবু তাহের খান কর্মী সভা ডেকেছেন। সেখানেই প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়ে যাবে প্রার্থী কে হবে, দাবি তৃণমূল সূত্রের।
আগামী ৭ মে ওই আসনেই বিধানসভা নির্বাচন হবে। নির্বাচনে ফের প্রতিপক্ষকে হারাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শিবিরও। বামেদের সঙ্গে জোটের শর্তে এবারও কংগ্রেস সেখানে বাম প্রার্থীকেই সমর্থন করবে। তৃণমূলের অন্দরে এখনও একাধিক ব্যক্তি নির্বাচনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফের শুরু হয়েছে ‘নিজেদের মধ্যেই এলাকা দখলের লড়াই’।
সেদিক থেকে বামেরা এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্তে স্থির। বড়সড় গ্রুপবাজির স্বীকার না হলে একুশের নির্বাচনে পঞ্চাশ হাজারের কম ভোট পাওয়া কামাল হোসেনকেই প্রার্থী করবে দল। কামাল এলাকার পরিচিত মুখ শুধু নয়। কাছের মানুষও। দাবি স্থানীয় বাম নেতৃত্বের। একুশে মেরুকরণের রাজনীতি না হলে কামাল জিততেন, এমন দাবি বামেদের। ডিওয়াইএফের প্রাক্তন জেলা সভাপতি কামাল ২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছিলেন। এবার অবশ্য দু’দিক থেকে তাঁদের পক্ষে যাবে নির্বাচন, এমনটা দাবি করেন কামাল। তিনি বলেন, “কে নির্বাচনে লড়াই করবে তা এখনও আমরা জানি না। তবে যেই লড়ুক মানুষ আমাদের পক্ষে থাকবেন। প্রয়াত বিধায়ক কোনও প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। মানুষের কাছে তৃণমূল চোরের দল হিসেবে আজ পরিচিত।”
এর পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচন হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে। সেই বাহিনীর ঘেরাটোপে নির্বাচন হবে ভগবানগোলাতেও। সেই আবহে মানুষ ভোট দেবে। আর তা জোটের পক্ষেই যাবে বলে মনে করেন এলাকার কংগ্রেস নেতৃত্বও।