“অ্যাপেন্ডিক্স” ছেঁটে বহরমপুরে সম্প্রীতির বার্তা মমতার

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর জেলায় বাবরি মসজিদ করতে চেয়েছিলেন। নড়ে গিয়েছিল রেজাউল করিমের মুর্শিদাবাদ। এসআইআর আবহে হুমায়ুনের ইচ্ছা জেলায় কার্যত কিনারে এনে দাঁড় করিয়েছিল তৃণমূলকে। বহরমপুরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার সভা করতে ওঠার আগে তাঁকে দল থেকে সরিয়ে দিয়ে ফিরহাদ হাকিমকে দিয়ে শুনিয়ে দিলেন দল হুমায়ুনের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখবে না। আর তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুক্ষণ পরে স্টেডিয়ামে জনসভা করতে এসে প্রায় একঘন্টার বক্তব্যে একটি বারও বিধায়কের নাম মুখে আনলেন না।

উল্টে ভোটের বাজারে বিজেপিকে ফের সাম্প্রদায়িক তকমায় ভূষিত করেছেন। মুর্শিদাবাদের ধর্ম নির্বিশেষে সহাবস্থান বোঝাতে নবাব সিরাজকে উদাহরণ হিসেবে টেনে এনেছেন। বলেছেন, ” অনেক ইতিহাস মুর্শিদাবাদ জেলা ঘিরে আছে। জেলায় হিংসা মানুষ পছন্দ করেন না। হিংসার রাজনীতি করেন না।” বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন ডিসেম্বরের ছ’তারিখ। সেদিন বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত তৈরি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন হুমায়ুন। সেই কথা উহ্য রেখে মমতা বলেন, ” তেত্রিশ বছর ধরে যে দিনটি সম্প্রীতি দিবস হিসেবে পালন করে আসছি সেদিনও কিন্তু মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনা ঘটে নি।”

সমসেরগঞ্জে সাম্প্রতিক যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে সে প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ” সংখাগুরুরা সংখ্যালঘুকে রক্ষা করবেন। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।” এদিন তাঁর বক্তব্যে ঘুরে ফিরেই এসেছে সম্প্রীতির বার্তা। হুমায়ুন শুধু বাবরি মসজিদ তৈরি করবেন বলেই দলকে অস্বস্তিতে ফেলেন নি। তিনি বেলডাঙার ডিএসপি উত্তম গড়াইকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন জাতীয় সড়ক অবরোধ হবে। যা আদতে আইনশৃঙ্খলা অবনতির প্রশ্ন। সেই প্রশ্নেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বিধায়ককে আগাম গ্রেফতার করার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দেন। হুমায়ুনকে নিয়ে নাজেহাল সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনও নালিশ করেছিলেন দলের প্রধানকে।

এদিন মমতা বলেছেন, ” মিরজাফরের মাথায় মুকুট পরিয়ে সিরাজদ্দৌলা বলেছিলেন তুমি ভেঙো না, স্বাধীনতাকে চলে যেতে দিও না। কিন্তু তুমি সম্মানরক্ষা করো। আমি আমার মুকুট তোমার হাতে তুলে দিচ্ছি। কিন্তু তুমি স্বাধীনতাকে রক্ষা করো। কিন্তু সেদিন এতবড় সম্মান দেখানোর পরেও মিরজাফর তা হতে দেননি। কিন্তু সিরাজ ঘরে ঘরে পুজিত হন।” হুমায়ূন কবীরকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার দলবিরোধী কথা বলার পরেও বারবার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু শুধরাননি বিধায়ক। ঘুরিয়ে এদিন হুমায়ুনকে সেই বার্তাই পাঠালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাদ দিলেন “অ্যাপেন্ডিক্স”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights