
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দিন কয়েকের মধ্যেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাঁদের ভোটার তালিকা দেখার কথা তাঁরাই বেঁকে বসেছেন শেষ বেলায়। এসআইআর নিয়ে বিতর্কের মাঝে নির্বাচন কমিশনের কাছে যা হয়ে উঠেছিল মাথা ব্যাথার কারণ। তাই শেষ মুহূর্তে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসারদের পথে আনার চেষ্টা করছে কমিশন। বৃহস্পতিবার বেলা বারোটার মধ্যে নিয়োগপত্র না নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কমিশনারের পক্ষ থেকে। সেই পদক্ষেপে মুর্শিদাবাদ জেলায় কিছুটা কাজ হয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচনের কাজে যুক্ত জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।
মুর্শিদাবাদ জেলায় ৫৮৯৫টি বুথে একজন করে বুথ লেভেল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের কাছে সেই সংক্রান্ত চিঠিও পৌঁছে গিয়েছে। এসআইআর বা Special Intensive Revision বা ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনের কাজটি মূলত করবেন বিএলও রাই। তাঁরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য খুঁটিয়ে দেখবেন। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক, প্যারা টিচার, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিএলও হিসেবে সাধারণত নিয়োগ করা হয়। এই অবস্থায় বিএলওরা বেঁকে বসায় মুশকিলে পড়েন মুর্শিদাবাদের মতো কয়েকটি জেলা। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক অপর্ণা মণ্ডল বলেন, ” বিএলও হিসেবে যাঁরা নিয়োগপত্র পেয়ে কাজে অনিচ্ছুক ছিলেন তাঁদের একাংশের শারিরীক অসুস্থতার মতো বিষয় ছিল। তাঁদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে।”
পশ্চিমবঙ্গে ৮০,৬৮১ জন বিএলও এসআইআরের কাজের সঙ্গে যুক্ত। সেই বিএলও-রা নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিএলও অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, বাংলায় এসআইআর বন্ধ করতে চেয়ে অনেক রাজনৈতিক গোষ্ঠী চাপ দিচ্ছে। মাঠে নেমে কাজ করতে গিয়ে বিশেষ করে মহিলা বিএলও-দের নিয়মিত হুমকির মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলেও সিইওকে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে তাঁরা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বিএলও-র কাজ ও স্কুলের ডিউটি সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা। তবে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন বিএলওদের অন ডিউটি ঘোষণা করাতেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বিএলও শিবিরে।
মুর্শিদাবাদ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সুতি, হরিহরপাড়ার মতো কয়েকটি ব্লকে বিএলওদের নিয়োগপত্র নিতে বেশি অনিহা ছিল। কমিশন কড়া হতেই বৃহস্পতিবার সেই বিএলওদের একাংশ ব্লকে ব্লকে গিয়ে নিয়োগপত্র নিয়েছেন বলে জানা যায়। জেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাচনী আধিকারিক লিটন সাহা বলেন, ” আমাদের জেলায় বিএলওরা দক্ষতার সঙ্গেই কাজ করেন। কিন্তু এসআইআরের কাজ করতে কয়েকটি ব্লকের বিএলওদের একটা বড় অংশ অনিচ্ছুক ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বৃহস্পতিবার নিয়োগপত্র নিয়েছেন। আশাকরি বাকিরাও নেবেন।”