ভিড়ের মাঝেও স্বতন্ত্র হতে গিয়ে সিপিএমের কপালে জুটল মৃদু ধমক

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সিপিআই (এম) মানেই যেন একটু ভিন্ন পথে হাঁটা। ভিড়ের মাঝেও স্বতন্ত্র প্রমাণের সর্বদাই যেন মরিয়া চেষ্টা নেতাদের। যা অনেক সময় বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সেই রকমই এক নির্দশন পাওয়া গেল এসআইআর নিয়ে মুর্শিদাবাদের নয়া জেলশাসকের সঙ্গে বৈঠকে। জেলার দায়িত্ব নিয়ে এসআইআর সংক্রান্ত সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন মুর্শিদাবাদের নতুন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটে থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে সিপিএমের শ্যাম দে, ফরোয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতা তথা সারাভারত যুবলীগের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ দেব, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অসীম রায়, যদুরাম ঘোষ, তৃণমূলের সুবোধ দাস ও বিজেপি’র বহরমপুর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র রায় ছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন বহুজন সমাজবাদী পার্টির এক প্রতিনিধি। জেলাশাসক সহ ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা নির্বাচনী আধিকারিক লিটন সাহা, অতিরিক্ত জেলাশাসক ( সাধারণ ) দীননারায়ন ঘোষ সহ নির্বাচনী কাজের সঙ্গে যুক্ত অন্য আধিকারিকরা।
গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর রাজ্যে এসআইআর চালু হয়েছে। SIR বা Special Intensive Revision বা বিশেষ নিবিড় সংশোধনের জন্য নভেম্বরের চার তারিখ থেকে বাড়ি বাড়ি যাবেন বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসাররা। ভোটার তালিকা ম্যাপিংয়ের কাজের সঙ্গে জুরে থাকবেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি বিএলএ বা বুথ লেভেল এজেন্টরা। সর্বোপরি জেলাশাসক বা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের পর্যবেক্ষণেই জেলায় সম্পন্ন হবে এসআইআর। সেই বিএলএ-দের তথ্য জমা দেওয়ার জন্য কমিশনের দেওয়া নির্দিষ্ট ফর্মাট না মানায় বৈঠকে উপস্থিত সিপিএম নেতাদের সতর্ক করেন জেলাশাসক।
সূত্রের দাবি, বিএলএ-দের জন্য নির্দিষ্ট ফর্মের বদলে সিপিএম দলের প্যাডে বিএলএ-দের তথ্য জমা দিয়েছে। কিন্তু জেলাশাসক কমিশনের গাইড লাইন দেখিয়ে উপস্থিত সিপিএম নেতাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দিষ্ট ফর্মাট বাদ দিয়ে বিএলএ তথ্য জমা দিলে কমিশনের আইন অনুযায়ী তা বাতিল হয়ে যাবে। সে কথা স্বীকার করে সিপিএম নেতা শ্যাম দে বলেন, ” নির্দিষ্ট ফর্মাটেই বিএলএ তথ্য জমা দেওয়া হবে।”
বৈঠকে নেতারা ২০০২ এর নির্বাচনী তালিকার হার্ডকপি তাঁদের দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে আবেদন করেন। যদিও সেই কপি দেওয়ার জন্য এখনও কমিশনের কোনও নির্দেশ আসেনি বলে পাল্টা তাঁদের জেলাশাসক জানিয়েছেন বলে জানান ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতা স্বরূপ দেব। কংগ্রেস নেতা অসীম রায় বলেন, ” যখন জেলায় এসআইআর শুরু হচ্ছে সেই সময় অনেক মানুষ বাড়িতে নেই। বিশেষ করে ছেলেরা। তাঁরা ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছেন। তাঁদের বাড়িতে থাকা বাধ্যতামূলক কি না জানতে চাওয়ায় জেলাশাসক জানিয়েছেন তাঁদের থাকা বাধ্যতামূলক নয়। প্রয়োজনীয় নথি বিএলওকে দেখালেই হবে।” তিনি এটাও বলেন, ” একজন বৈধ ভোটারের নামও যাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে না বলেও বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের আশ্বস্ত করেন জেলাশাসক।”
ভারপ্রাপ্ত জেলা নির্বাচনী আধিকারিক লিটন সাহা এদিন বলেন, ” স্বীকৃত আটটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ছ’টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা আজকের বৈঠকে এসেছিলেন। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে এসআইআর সংক্রান্ত যে সব নির্দেশ কমিশনের পক্ষ থেকে এসেছে, সেসব নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বিশদে আলোচনা হয়েছে।” জেলার সব বিধানসভা মিলিয়ে ৫ হাজার ৮৯৫টি বুথ ছিল। ভোটারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ডিএলও কার্যালয় থেকে আরও ১২৫১টি বুথ বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের কাছে। লিটন বলেন, ” সেই প্রস্তাব কমিশন মেনে নিয়েছে। সেই বিষয়েও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ” নবাগত জেলাশাসকের সঙ্গে জ্বলন্ত ইস্যূ নিয়ে বৈঠক শেষে অবশ্য খুশি রাজনীতির কারবারীরা।
Go ahead, smoothly and honestly. We are with you for your good & perfect news.
Hope you will be sign.