
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মানুষের বন্ধু হয়ে উঠবে পুলিশ। সেই পদক্ষেপে বারবার সফল হয়েছে মুর্শিদাবাদ পুলিশ। সম্প্রতি জেলার কোনায় কোনায় বোমার খোঁজ দিতে সোর্স হিসেবে সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে সুনাম কুড়িয়েছে যে পুলিশ তার মুখ পুড়ল শুক্রবার। আস্থা অর্জন করতে না পেরে কান্দির গোকর্ণতে সেই সাধারণ মানুষের হাতে নিগৃহিত হল পুলিশ। সুযোগ বুঝে পুলিশকে খোঁচা দিল বিজেপি।
দু-পক্ষের জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে শুক্রবারে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কান্দির গোকর্ণ। আর সেই বিবাদ থামাতে গিয়ে শাবলের আঘাতে মাথা ফাটল আইসি মৃণাল সিনহার। তাঁকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিবাদমান জমি নিয়ে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে একটি মামলা চলছে। দাবি, সেই জমিতে ধান কাটতে গিয়ে আজ শুক্রবার সকালে ঝামেলা বাঁধে দু-পক্ষের।
পুলিশ গেলেও সেই বিবাদ থামেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে ঘটনাস্থলে যান কান্দি থানার আইসি। সেই সময় পুলিশকে তাড়া করে বিবাদমান দুই গোষ্ঠীই। আহত হন আইসি সহ পাঁচ জন পুলিশ কর্মী। আইসির মাথা লক্ষ্য করে শাবল দিয়ে আঘাত করা হয় বলে দাবি। অন্য দুই পুলিশের একজনের হাতের কব্জি ভেঙেছে। বাকি দুজনের আঘাতও গুরুতর। পুলিশ পক্ষ অবলম্বন করছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। দাবি, বিবাদমান একপক্ষের কাছে মজুত ছিল বোমাও।
সেই ঘটনার খবর পেয়ে কান্দি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শশরেখ আমবর্দারের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। বহরমপুর থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) অনিমেশ রায়, ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) তমাল বিশ্বাসও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ব্যপক ধরপাকড় শুরু হয়। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত পুলিশ ১৪ জনকে আটক করেছে।
কান্দি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বলেন, ” ধান কাটাকে কেন্দ্র করে অশান্তি হয়। সেই অশান্তি থামাতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা হয়। আইসি সহ পাঁচ জন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছে।” আলোচিত জমি বিচারাধীন কি না তা পরিস্কার নয় পুলিশের কাছে দাবি করে এসডিপিও বলেন, “কোনও পক্ষই এখনও কাগজপত্র দেখিয়ে দাবি করেনি যে ওই জমি আদালতের বিচারধীন।” তবে পুলিশ পক্ষ নিয়েছিল দাবি করলেও এসডিপিও তা খারিজ করে বলেন, “পুলিশের ওপর হামলা করলে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ ওঠে।”
এদিকে পুলিশের মার খাওয়ার ঘটনায় বহরমপুর সংগঠনের বিজেপি সভাপতি মলয় মহাজন পুলিশকে খোঁচা দিয়ে বলেন, “ পুলিশকে শান্তিরক্ষক বলা হয়। মানুষ পুলিশ দেখলে শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ তেমন নয়। হয় তৃণমূলের চাকর হয়েছে কিংবা মানুষের ত্রাস হয়েছে। পুলিশ বন্ধু হতে পারেনি। মানুষ তাই শঙ্কিত হয়ে মানুষকে আক্রমণ করে। পুলিশের উপর মানুষের অনাস্থা। ” বিজেপি সভাপতি কথার কোনও গুরুত্ব নেই কারণ মুর্শিদাবাদে বিজেপি নেই বলে পাল্টা দাবি করেন তৃণমূলের বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি অপূর্ব সরকার। উল্টে তিনি বলেন, “ এই ঘটনা না ঘটলেই ভালো হতো। উভয়পক্ষের তা কাম্য ছিল না। আমাদের কাছে এলে এই ঘটনা ঘটতো না। সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করবো।”