
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্ক: পাইলট কার, পুলিশ সুপারের জন্য বরাদ্দ গাড়ি, নিরাপত্তারক্ষী ছেড়ে বাইকে চেপে বহরমপুর সহ একাধিক এলাকা পরিদর্শন করলেন কুমার সানি রাজ। নবমী নিশিতে সরেজমিনে আম আদমির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তে পথে নামলেন পুলিশ সুপার। পুজোর মণ্ডপ ছেড়ে জনতা দেখল একদল তরুণ আইপিএসের বাইক র্যালি। সসম্মানে পথ ছেড়ে দিল মানুষ, ভিড়ে সহযোগিতা করলেন এসপিও।
বহরমপুর থেকে বেরিয়ে নজরুল সরণি ধরে লালবাগ। সেখানকার মন্ডপে মন্ডপে পরিদর্শন সেরে চুনাখালি নিমতলা হয়ে বহরমপুরে ঢোকেন পুলিশ সুপার। ওই রাস্তা ধরে বিষ্ণুপুর কালিবাড়ি হয়ে বাবুলবোনা ক্লাবের পূজো মন্ডপ ঘুরে পুলিশ লাইনে ফেরেন তিনি।
পুজোর সময় ট্রাফিক নিয়ে বহরমপুরবাসীর কাছে লেটার মার্কস কুড়য়েছে মুর্শিদাবাদ পুলিশ। বাইরে থেকে যাঁরা বহরমপুরে ঠাকুর দেখতে এসেছেন পুলিশের প্রশংসা তাদের মুখেও। সপ্তমীর সন্ধ্যায় কান্দি বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এক দল মদ্যপ যুবক মারামারিতে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ওইটুকু ঘটনা ছাড়া আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা পুজোর কদিনে হয়নি।
নির্বিঘ্নে দুর্গা পুজো পার করতে প্রথম দিন থেকেই সতর্ক মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। প্রত্যেক বছর পুলিশের পক্ষ থেকে যানজট এড়াতে পথ বেঁধে দেওয়া হয় যানবাহনের। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এ বছর পুলিশ যানজটের থেকেও বেশি সতর্ক হিংসার ঘটনা ঠেকাতে।
গত বছর কার্তিক লড়াইকে কেন্দ্র করে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল বেলডাঙায়। কালীপুজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল সর্বাঙ্গপুর। শেষ চৈত্রে ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল হয়েছিল উত্তর মুর্শিদাবাদের সমসেরগঞ্জ। সেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কার্যত কালঘাম ছুটেছে প্রশাসনের। সেইসবই অভিজ্ঞতা।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সতর্ক পুলিশ। স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আছে সশস্ত্র পুলিশের নজরদারি। সে সব ঠিকঠাক আছে কি না দেখতেই এদিন পথে নেমেছিলেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ” কোনরকম অঘটন যাতে না ঘটে তার জন্য পুলিশের সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার শান্তি রক্ষা কমিটিও এ ব্যাপারে পুলিশকে সহযোগিতা করছে।”
রাত পোহালেই দশমী, তারপরেই প্রতিমা নিরঞ্জন হবে। এই প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করেও যাতে কোন অসুবিধা না হয় সে ব্যাপারে সমস্ত ঘাটে চলছে নজরদারি। পুলিশ সুপার বলেন, ” ঘাটগুলোকে পরিষ্কার করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। বিসর্জনের সময় যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেজন্য পুরসভা, জেলা পরিষদ, বিডিও, এসডিও সমস্ত স্তরে কথা বলে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”