
বিদ্যুৎ মৈত্র: নিট কিংবা জয়েন্টের ঘাঁচে দেশের মধ্যে প্রথম কোন স্কুল বোর্ডে এমসিকিউ প্রশ্নে পরীক্ষা চালু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। রাজ্যের আরো বেশি বেশি ছেলেমেয়ে যাতে নিট কিংবা জয়েন্টের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারে সেই উদ্দেশ্যেই এগোচ্ছে সংসদ। পদার্থবিদ্যার প্রশ্ন হাতে নিয়ে পড়ুয়াদের মনে হয়েছে “প্রশ্নের মান প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মতোই।”
অনেক পরীক্ষার্থী ধরে নিয়েছিলেন বোর্ডের পরীক্ষা তুলনামূলক সহজ। সেখানে থিওরেটিক্যাল প্রশ্ন বেশি থাকবে। কিন্তু প্রশ্নপত্র হাতে নিয়ে পরীক্ষার্থীরা দেখেন সেখানে নিউমেরিক্যাল প্রশ্ন বেশি। সেই প্রশ্নের সমাধান একজন ছাত্রকে হলে বসেই করতে হয়েছে। আর সেই চিন্তা থেকেই অনেকে ৩৫ নম্বর পুরো উত্তর করে আসতে পারেননি। অনেকে আবার সময়ে পরীক্ষা শেষ করেছেন।
এক পরীক্ষার্থী অনিকেত ঘোষ বলেন, ” আমার পরীক্ষা ভালো হয়েছে। তবে এই ধরনের প্রশ্ন নিট বা জয়েন্টের হয়। সময়ে পরীক্ষা শেষ করতে পারবো কিনা তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলাম।” আর এক পরীক্ষার্থী আর্য ভট্টাচার্য বলেন, ” প্রশ্নের মান ভালো। নিউমেরিক্যাল প্রশ্ন থাকায় উত্তর করা সুবিধা হয়েছে। সময় পরীক্ষা শেষ করতে পেরেছি।”
পদার্থবিদ্যা পরীক্ষার দিন মুর্শিদাবাদের তিনটি স্কুলে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। পরীক্ষা শেষে গিয়েছিলেন বহরমপুরের একটি স্কুলে। প্রশ্নপত্রের প্রতিক্রিয়া ফোনে তাঁকে জানানো হলে তিনি বলেন ” এটা ঠিক প্রশ্নপত্রে নিউ মেরিক্যাল প্রশ্ন বেশি ছিল। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ধাঁচে প্রশ্নপত্র হয়েছে। যাঁরা ভালো করে বই পড়ে পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন তাদের কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।” একই সঙ্গে তিনি এটাও জানান অংক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় বদলানোর যে দাবি পরীক্ষার্থীরা তুলেছেন তা চলতি বছরে সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন “ইচ্ছে থাকলেও আইনগত দিক দিয়ে তা সম্ভব হবে না। পরে বিষয়টি চিন্তাভাবনা করা হবে।”
যে স্কুলগুলোতে তিনি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সেখানে সুন্দরভাবেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। সব জায়গাতেই সংসদের নিয়ম মেনে পরীক্ষা হয়েছে বলে জানান সংসদ সভাপতি। পরীক্ষা শেষে তিনি বহরমপুরের একটি স্কুলে যান। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহশিক্ষকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ও কথা বলেন।
এদিকে ডোমকলের একটি স্কুলে পরীক্ষা শুরুর আগে এক ছাত্রীর প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। তড়িঘড়ি ডোমকল হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেই খবর পেয়ে হাসপাতালেই একজন পরিদর্শকের উপস্থিতিতে ওই ছাত্রীর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান মুর্শিদাবাদ জেলা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার যুগ্ম আহ্বায়ক সুদীপ সিংহ রায়। তিনি বলেন ” আগামী দিনে ও ওই পরীক্ষার্থী হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”