
বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের দায়িত্ব হাতবদল হল আজ বুধবার বিকেলে। বিদায়ী জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নিলেন নবাগত নীতিন সিংহানিয়া। তাঁকে স্বাগত জানান জেলা প্রশাসনের অন্য আধিকারিকরা।
২০১৩ ব্যাচের পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইএএস নীতিন অর্থনীতিবিদ্যায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে। ইন্ডিয়ান ইকোনোমি-র মতো বেস্ট সেলার বইয়ের জনক নীতিন। বইটির প্রকাশক টাটা ম্যাকগ্রাহিল সূত্রে জানা যায় চলতি বছর বইটির ষষ্ঠ সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি সহ তিনটি ভাষাতেই বইটি পাওয়া যায়। মালদায় জেলাশাসক থাকাকালীন ২০২৩ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ইন্ডিয়ান আর্ট অ্যান্ড কালচার বইটি। এই বইগুলি সহ একাধিক বইয়ের জনপ্রিয় লেখক মুর্শিদাবাদের বর্তমান জেলাশাসক। মূলত আমলা হওয়ার সর্বভারতীয় পরীক্ষার্থীদের জন্যই বইগুলি মূলত লেখা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে সম্প্রতি মোট ১৪ জন মেধাবী ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় গ্রুপ এ-তে পাশ করেছে। তাঁদের মধ্যে ছ’জন এক্সিকিউটিভ। নভেম্বরে তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। তাঁদেরই একজন জলঙ্গির আরিফ মন্ডল বলেন, ” স্যারের লেখা ডব্লিউবিসিএস ম্যানুয়াল ও ইন্ডিয়ান ইকোনমি বইটি পড়তেই হয়েছে।” রাজ্যের সবথেকে বড় ও কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি আরিফ নিজেই নিয়েছিলেন। আরিফ ও তাঁর দু-এক জন বন্ধু মিলে নতুনদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন। আরিফ বলেন, ” আমাদের কেউ দেখানোর ছিল না। নিজেরাই প্রস্তুত হয়ে পাশ করেছি।” আরিফের আর্জি, ” মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রতি বছর অনেক মেধাবী ছেলেমেয়ে প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষায় বসে। অধিকাংশের মোটা টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সামর্থ নেই। তাঁদের জন্য সরকারিভাবে একটা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করলে অনেকের উপকার হবে।”
মুর্শিদাবাদ জেলা গ্রন্থাগারে একসময় ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য জেলার বেকার ছেলেমেয়েদের উৎসাহ দিতে ব্যক্তিগতভাবে কোচিং ক্লাস চালু করেছিলেন মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও বর্তমানে জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) দীননারায়ন ঘোষ ও কয়েকজন। পরবর্তী সময়ে সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন জেলার আরও দুই প্রাক্তন আমলা সুমন বিশ্বাস ও কৃষ্ণেন্দু মন্ডল। সেই কোচিং ক্লাস থেকে বহু পরীক্ষার্থী সফল হয়েছে পিএসসি পরীক্ষায়। কিন্তু সেই কোচিং ক্লাস বন্ধ হয়ে যায় কালের নিয়মেই। পরে সরকারি প্রকল্প হিসেবে জেলায় আমলা তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কোভিড পরবর্তী সময়ে। ক্লাসও শুরু হয়েছিল কৃষ্ণনাথ কলেজে, কিন্তু আজ আর তার হদিশ নেই কোথাও। নতুন জেলাশাসকের হাত ধরে কি ফের শুরু হবে কি সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পথচলা ? আশার আলো দেখছেন মুর্শিদাবাদের মেধাবীরা।
হবে আমি করবো স্যার এর সহায়তায়