
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বহরমপুর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা স্থান দেখতে এসে লক্ষাধিক লোকের জমায়েতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান, কান্দির অপূর্ব সরকাররা। আজ বৃহস্পতিবার সভা শেষেও খলিলুর বললেন, ” আমাদের লক্ষ্যপূরণ হয়েছে।” যদিও মাঠের ভিড় তার প্রমাণ দেয় না। প্রশাসনিক বৈঠক থাকলেও এর আগে স্টেডিয়ামের সভামঞ্চ ঘিরে থাকতো তৃণমূলের পতাকা। নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে শোনা যেতো ‘দিদি দিদি’ ডাক। এদিনও শহর ঢেকেছিল তৃণমূলের পতাকায়। কিন্তু মাঠ ভরেনি লোকে। মঞ্চ ভরেছিলেন অবশ্য সাংসদ, বিধায়করা। খলিলুর বলেন, ” আমরা যেমন আশা করেছিলাম তেমনই লোক হয়েছিল। তবে একদিকে শীত ও অন্যদিকে মাঠে কাজ না থাকলে আরও অনেক মানুষ আসার সুযোগ পেতেন।”
স্টেডিয়াম ঢোকার দু’দিকের রাস্তা জুড়ে দলনেত্রীর ছবি দেওয়া হোর্ডিং-এর নিচে স্পনসর্ড নেতাদের নাম, দেখে যেন মনে হচ্ছিল এ শহর শুধুই মমতাময়। যে নেতারা দিদির নজরে পড়তে ‘ট্যাঁকের পয়সা’ খরচ করে হোর্ডিং পোস্টার লাগিয়েছিলেন শহরের দেওয়াল জুড়ে, তাদের অনেককেই শুধু থাকতে হলো মঞ্চের উল্টোদিকে শ্রোতাদের সঙ্গে। যা দেখে কেউ মুচকি হাসলেন, কারও চোখে প্রতিশোধের আগুন জ্বললো হেমন্তের দুপুরে।
আরও পড়ুনঃ “অ্যাপেন্ডিক্স” ছেঁটে বহরমপুরে সম্প্রীতির বার্তা মমতার
আন্দাজ আগেই ছিল। গত পনেরো বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চ যত বড় হয় এবার বহরে তা ছিল ছোট। নজরে পড়ার মতো ছিল রঙিন। তৃণমূলের বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি অপূর্ব সরকার, চেয়ারম্যান নিয়ামত শেখ, বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়, বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আইজুদ্দিন মন্ডলরা শেষ বেলার মঞ্চ দেখতে গিয়েছিলেন বুধবার। মঞ্চ প্রস্তুতকারী ডেকরেটরকে কোথায় কী হবে তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন অপূর্ব। এদিন তাঁদের সঙ্গে সংখালঘু সেলের সভাপতি আবুল কাউসার, বিধায়ক মহ. আলি ছাড়াও তৃণমূল যুব সংগঠনের নেতা ভীষ্মদেব কর্মকার, ভাকুড়ি পঞ্চায়েতের উপ প্রধান বিপ্লব কুন্ডুরাও সভাস্থলে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই মঞ্চ দেখে কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।
হিসেব মিলিয়ে সেই মঞ্চেই বৃহস্পতিবার ছিলেন না কোনও শাখা সংগঠনের জেলা নেতারা। অথচ এবারই নতুন করে সাজানো সংসারে ধরে নেওয়া হয়েছিল সবাইকে একাসনে রেখে দলকে বেঁধে থাকার বার্তা দেবেন ‘দিদি’। তবে জেলার সব পুরসভার চেয়ারম্যানই যে মঞ্চে ঠাঁই পেয়েছিলেন এমন নয়, জঙ্গিপুর ও ধুলিয়ান পুরসভার চেয়ারম্যানরা ছিলেন সাধারণের আসনেই। বহরমপুরের সাংগঠনিক কর্মাধ্যক্ষরা মঞ্চে জায়গা পেলেও জঙ্গিপুরের কর্মাধ্যক্ষরা সকলে জায়গা পায়নি মঞ্চে। আবার বহরমপুরের যুব সভাপতি যেমন মঞ্চে জায়গা পাননি তেমন সংখ্যালঘু সংগঠনের জেলা নেতা আবুল কাউসারও স্থান পাননি। মঞ্চে জায়গা পাননি মহিলা সভানেত্রীও। অথচ মঞ্চে ছিলেন মৎস কর্মাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সুমন। মঞ্চে ছিলেন হরিহরপাড়া ব্লকের যুব সভাপতি।
খলিলুর অবশ্য বলেন, ” মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাই ঠিক করে দিয়েছিলেন কত লোকজন থাকবেন মঞ্চে। সেই হিসেবেই বিধায়ক, সাংসদ, কর্মাধ্যক্ষদের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সব শাখা সংগঠনের প্রধানদের বসালে দুই জেলা মিলিয়ে অনেক ভিড় হয়ে যেতো।” তবু তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, ” পদাধিকার ছাড়াও অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে ছিলেন। ”