২০২০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে বধু নির্যাতনের অভিযোগ এনে বহরমপুর মহিলা থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর পুত্রবধু রাখী অধিকারী।

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সুকুমার অধিকারীর নিথর দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বহরমপুরে। বুধবার সাত সকালে রানিবাগান এলাকায় একটি হোটেলের পাশে তাঁর নিথর দেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেয়। বহরমপুর থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, “ওই নেতা আত্মহত্যা করেছেন।”
৬৮ বছর বয়সী এই নেতা একদিকে শারিরীক অসুস্থতা অন্যদিকে তিনি ধার দেনায় জেরবার হয়ে গিয়েছিলেন বলে পুলিশের দাবি। সেই কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন কি না তা অবশ্য পরিস্কার করেনি পুলিশ। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তৎকালীন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা থেকে সভাপতির পদে বসেছিলেন সুকুমার। বহরমপুর হোলসেল কনজিউমার কোঅপারেটিভ সোসাইটির দু’বারের চেয়ারম্যান ছিলেন।
একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিত ছিলেন দল ও প্রশাসনে। এদিন তাঁর মৃত্যু সংবাদ শুনে জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মুশারফ হোসেন মন্ডল দুঃখপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ওঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। আমরা একসঙ্গে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আপাদমস্তক একজন কাজের মানুষ ছিলেন। একজন সহকর্মী এভাবে চলে যাবেন ভাবতেও পারছি না।” তৃণমূলের বর্তমান জেলা পরিষদের সদস্য শাহনাজ বেগম বলেন, ” ব্যক্তিগতভাবে একজন সজ্জন মানুষ ছিলেন সুকুমার দা। তাঁর এমন মৃত্যু অনভিপ্রেত।”
যদিও পারিবারিক নানান অশান্তিতেও প্রয়াত নেতা ভুগতেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়। ২০২০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে বধু নির্যাতনের অভিযোগ এনে বহরমপুর মহিলা থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর পুত্রবধু রাখী অধিকারী। পুত্র সুপ্রিয় অধিকারীর অভিযোগ ছিল ” লকডাউনের সময় বাবা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন।” ২০২১ সালে সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য সুকুমার বাবুর বিরুদ্ধে চাপ দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁর পুত্র ও পুত্রবধু। যদিও সেই সময় তাঁর পুত্রের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্কও নেই বলে জানিয়েছিলেন সুকুমার। সেই ঘটনাও প্রয়াত নেতাকে অবসাদে ঠেলে দিয়েছিল কি না তাও অবশ্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ।