তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনও আসছে অভিষেকের তালুতে

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূলের সব শিক্ষক সংগঠন পুজোর আগেই ভেঙে দিলেন রাজ্য নেতারা। পুজোর পরে তৈরি হবে নতুন কমিটি। ঘোষণা ও হবে তখন। তৃতীয়ার বিকেলে এমনটাই জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। এই ঘোষণায় শিক্ষক সংগঠনের একটি অংশের নেতা যেমন খুশি তেমনি রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট অন্য একটা বড় অংশ। সামনে ২০২৬ এর নির্বাচন, তার আগেই শিক্ষক সংগঠন ভেঙে নতুন করে গড়লে তার প্রভাব ভোটে পড়বে বলে মনে করছেন একাংশ শিক্ষক।

চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ২১ তারিখ আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে জেলায় নতুন কমিটি তৈরি হয়েছিল। সেই কমিটির মেয়াদ ফুরলো ২৫ অক্টোবরেই। তার আগে যে কমিটি তৈরি হয়েছিল সেই কমিটিও এক বছর টেকেনি। লোকসভা ভোটের আগে সেই কমিটি তৈরি হয়েছিল ২০২৪ সালের মার্চ মাসে। সেই সময় মুর্শিদাবাদে নতুন কমিটি নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ জমা হয়েছিল শিক্ষকদের অন্দরে। যদিও বহরমপুর আসন নির্বাচন জিতে যাওয়ায় তা কিছুটা ধামাচাপা পড়ে যায়। পরে ২০২৫ এর জানুয়ারি মাসে ব্রাত্য বসু জেলায় জেলায় নতুন নেতা তৈরি করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন সংগঠনের। সেই নেতাদের এদিন ব্রাত্য ঘোষণা করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

যদিও তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের (মাধ্যমিক) রাজ্য নেতা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগামী দিনে মূল দলের অনুমতি নিয়ে নতুন কমিটি তৈরি হবে। সদ্য প্রাক্তন নেতারা তখন দায়িত্বে ফিরতে পারেন আবার নাও ফিরতে পারেন। তবে যাঁরাই দায়িত্ব পাবেন তাঁদের দলের হয়েই কাজ করতে হবে।”

দলীয় সূত্রে জানা যায়, দিন কয়েক ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল ব্লক ও শহর সভাপতি পরিবর্তন করছে। সেই সুযোগে দলের অন্দরে ফের শিক্ষক সংগঠনে রদবদলের দাবি ওঠে। জেলায় জেলায় দাবি ওঠে অধরা কমিটি ঘোষণার। দাবি জোরাল হয় দিন দুয়েক আগে। যুক্তি পাল্টা যুক্তিতে অবশেষে পিছু হঠতে হয় রাজ্য নেতাদের। আর এখানেই উঠে আসছে আরও একটি যুক্তি।

ন’মাস আগে সংগঠনের চেয়ারম্যান ব্রাত্য বসু যে কমিটি ঘোষণা করেছিলেন সেই কমিটি একটা ভোট পেরনোরও সুযোগ পেল না কেন? নতুন কমিটি ঘোষণার সময় শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন জেলা সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ও তাঁদের মতামত নিয়েই তৈরি হয়েছে কমিটি। তৃণমূল দলে শিক্ষক সংগঠন বামপন্থী দলের মতো গণ সংগঠন হিসেবে কাজ করে না। এই দলের মহিলা, যুব, ছাত্র সংগঠনের মতো শাখা সংগঠন হিসেবে কাজ করে। সেই সংগঠন মূল দলের অনুমতি নিয়ে তৈরি হয়। কিন্তু ব্রাত্য অনুমোদিত কমিটির সেই অনুমতি ছিল না। যদিও সেদিন ব্রাত্য বসু তাঁর ফেসবুক পেজে শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের নতুন তালিকা পোস্ট করে লিখেছিলেন ” পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমত্যানুসারে তথা নির্দেশে …”

সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই দলের নেতা, উপনেতা তৈরি করে আগাপস্তালা পরিবর্তন করতে নেমেছেন যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি শিক্ষক সংগঠনকেও তাঁর আওতায় আনতে চাইছেন। এদিনের নির্দেশে তা স্পষ্ট হয়েছে বলে অবশ্য মেনে নিচ্ছেন তৃণমূল শিক্ষা সেলের একাংশ নেতাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights