
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ফারাওএর দেশে এল গোনা শহরের লাল জলে দশ কিলোমিটার সাঁতরানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন বহরমপুরের বিশ্বনাথ অধিকারী সহ আরও ৩৭ জন। এক ঘন্টা ৪৭ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড সাঁতরে সকলকে পিছনে ফেলে প্রথম হয়েছে কলোনির ছেলেটা।
লড়াইটা শুরু হয়েছিল বহরমপুরের ভাগীরথীর পারে। সেই গান্ধী কলোনির ছেলে বিশ্বনাথ মিশরের সমুদ্রে সাঁতরে প্রথম হয়ে মান রাখল দেশেরও। সেই সঙ্গে কয়েক কদম এগিয়ে গেল তাঁর ইংলিশ চ্যানেল জয়ের স্বপ্ন। তাঁর সাফল্যে গর্বিত মুর্শিদাবাদের ক্রীড়াপ্রেমিরা।
এই তরুণ, সাঁতারু হিসেবে নিজের জাত চিনিয়েছিল বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম ৮১ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতায়। ২০১৫ সালে ওই প্রতিযোগিতায় তাবড় সাঁতারুদের হারিয়ে তৃতীয় হয়েছিল সে। সেই সময় তাঁর সম্বল ছিল ভাগীরথী। সঙ্গে ছিলেন জগন্নাথ সাহা। প্রয়াত অজয় ঘোষ তাঁকে চিনতে ভুল করেননি। আজ বহরমপুর সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন ও একটি বেসরকারি স্কুলের খুদেদের সে একজন প্রশিক্ষক। গড়ে দিতে চায় তাঁদের স্বপ্ন।
তবে সহজ রাস্তায় জয় আসেনি বিশ্বনাথের। মিশরে লোহিত সাগরের তীরে এল গোনা শহরের বসেছিল ওসিয়ানম্যান আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হলে চাই অর্থ। সেই বিপুল পরিমাণ অর্থের জোগান দেবে কে? যার কাছে পেরেছে দু-হাত পেতেছে সে। কেউ পাশে দাঁড়িয়েছে। কেউ সরিয়ে দিয়েছে দুয়োর থেকেই। বহরমপুর শহরের দুই চিকিৎসক জয়দীপ গঙ্গোপাধ্যায় আর সম্রাট গঙ্গোপাধ্যায়, পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়, তাঁর ক্লাব, যে স্কুলে সে সাঁতারে প্রশিক্ষক সেই ক্লাব তাঁকে ফেরায় নি। উৎসাহ দিয়েছে এগিয়ে যেতে। কথা রেখেছে বিশ্বনাথ।
কৃতজ্ঞ বিশ্বনাথ তাঁদের কথাও ভোলেন নি। বললেন, ” ওঁরা পাশে না দাঁড়ালে আমি এতদূরে আসতেই পারতাম না।” প্রসঙ্গত, গত বছরেও মালয়েশিয়ার সমুদ্র জয় করেছে বিশ্বনাথ। আজ ফিরছে আরও এক সমুদ্র জয় করে।
বিশ্বনাথের এই পার্ফমেন্স প্রমাণ করলো মুর্শিদাবাদ পিছিয়ে পরা জেলা নয়, আমরাও পারি, তবে ওর নিজের উদ্বোগে সব হয়েছে। বেশ কিছু স্বহৃদয় ব্যাক্তি ও সংস্থা ওকে হেল্প করেছে। আগামীদিনে আরো অনেক বিশ্বনাথ যাতে জেলার নাম উজ্জ্বল করে সেই দিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ। আমরা গর্বিত বিশ্বনাথের জন্য।
নব্য মুর্শিদাবাদের পতাকাবাহী বিশ্বনাথ