
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সময় নদীর স্রোতের মতো বয়ে যাচ্ছে দেখেও কার হাতে এই রাজ্যের ভার তুলে দেওয়া হবে তা জুন মাস অবধি ঠিক করে উঠতে পারেনি অমিত শাহ’রা। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোন মুখকে দাঁড় করালে জনমানসে বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না তা ঠিক করতে গিয়ে গোষ্ঠী বিবাদে হাঁফিয়ে উঠেছিল দল। বিয়ের আগে দলে সক্রিয় হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি সংঘ ঘনিষ্ঠ দিলীপ ঘোষ।
কিন্তু দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পর দল বিরোধী একাধিক মন্তব্যের কারণে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বও দলের একাংশ মেনে নিতে পারছিল না। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি দলে নাক গলাতে চান বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি। একই সঙ্গে বাম, কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দল রাজ্যের তৃণমূল ও কেন্দ্রের বিজেপিকে এক বন্ধনীতে রাখে। এই অবস্থায় এমন একজন কাউকে রাজ্য বিজেপি’র নেতা দরকার ছিল যাঁর গ্রহণ যোগ্যতা নিয়ে দল কিংবা বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠবে না। অবশেষে সেই মুখ খুঁজে পেয়েছে বিজেপি।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১২:০০ টায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও বিধায়ক শ্রী দীপক বর্মন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে আগামীকাল সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে বেলা দুটো থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত। সেই তালিকা থেকে যদি নির্বাচনে প্রয়োজন হয় তাহলে তা হবে বৃহস্পতিবার। সেই নির্বাচন মিটে গেলে কিংবা না হলে ওইদিনই বেলা ১.৩০ এ ঘোষণা হবে বিজেপি’র রাজ্য সভাপতির নাম।
আর দলের গুঞ্জন দলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন সাংসদ ও সুবক্তা শমীক ভট্টাচার্য। তাঁকে সামনে রেখে ২০২৬ এর নির্বাচনে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে চাইছে বিজেপি। ২০২৫ এই নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা ঘুরে গিয়েছেন বাংলা থেকে। নরেন্দ্র মোদির গলাতে ছিল রাজ্যের শাসক বদলানোর ইঙ্গিত। কিন্তু যে পরিমাণ শক্তি আর সাহস থাকলে বদলে ফেলা যায় পনের বছরের একটি সরকারকে সেই লড়াই বিজেপি এখনও দিতে পারেনি।
জেলায় জেলায় দলের কোন্দলে অনেক বিধায়ককে দলের সঙ্গে দেখতে পাওয়া যায় না। কোথাও কোথাও জেলা সভাপতি বদলানোর পরে সেই সমীকরণ বদলেছে ঠিকই কিন্তু জনমানসে যে শাসক বিরোধী হাওয়া তুলে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল সেই হাওয়া তুলতে পারেননি বিজেপি’র রাজ্য নেতারা। আরজিকর হাসপাতালে তরুণী শিশু মৃত্যুর ঘটনাই হোক কিংবা আইন কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের মতো ঘটনাই হোক বিজেপি নেতারা ঝড় তুলতে পারেন নি। জনমানসেও তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এমন সময় মার্জিত ও শিক্ষিত শমিক ভট্টাচার্য বেলাগাম দূর্নীতি ও উচ্ছৃঙ্খল তৃণমূলের সঙ্গে কতটা পাঙ্গা নিতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে বলে দাবি করেছেন মুর্শিদাবাদের এক বিজেপি নেতা। যদিও তাঁর দাবি, ” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের মনে বাম বিদ্বেষ সঞ্চারিত করতে পেরেছিল, বিজেপি সেই পথে যেতে রাজি নয়।” কারও মতে ” শমীকের হাতে দল দায়িত্ব তুলে দিলে দলে গণতন্ত্র বজায় থাকবে। দল লড়াইয়ে শক্তি পাবে।”