পাঠান (সেনা?) ভোটে লড়তে এল

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ “ফাগুন মাসে দখিন হতে হাওয়া/ বকুলবনে মাতাল হয়ে এল।/বোল ধরেছে আমের বনে বনে। ভ্রমরগুলো কে কার কথা শোনে।গুন্‌গুনিয়ে আপন-মনে-মনে।ঘুরেঘুরে বেড়ায় এলোমেলো।” রবীন্দ্রনাথের কবিতার লাইন ধরে বলাই যায়, বহরমপুরে (দলে দলে) আজি পাঠান (সেনা?) ভোটে লড়তে এল। তবে বলাই বাহুল্য এ পাঠান আর সে পাঠানে মিল খুঁজে পাওয়া ভার।

ইনি ইউসুফ পাঠান। ১০ নম্বর বহরমপুর লোকসভা আসনে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর বিরোধী প্রার্থী।
তাঁকে মিষ্টি খাওয়ানোর এলাহি আয়োজন করেছিলেন বহরমপুর শহর তৃণমূলের নেতারা। নেতৃত্বে অবশ্যই নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। সেদিক থেকে দেখলে অতিথির আপ্যায়নে নাটকের শহর বহরমপুরের মান রেখেছেন তিনি। আর্থ সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এই শহরে যখন বিশ্বের একাধিক দেশের নাট্যশিল্পীরা আসতেন তখন অতিথি আপ্যায়ন নিয়ে কোনও ত্রুটি খুঁজে পেতেন না তাঁরা। নাড়ুগোপাল সেই ধারা বজায় রেখেছেন বলে বাড়িতি প্রশংসা কুড়িয়েছেন দলের সভাপতির।

আরও পড়ুনঃ Minister হুমায়ুন?

স্টেডিয়াম বাদ দিলে টেক্সটাইল কলেজ মোড় রাজনৈতিক দলগুলির মুখ্য সভাস্থল হয়ে উঠেছে ইদানিং। বৃহস্পতিবার সেখানেই তৃণমূলের ইউসুফের সংবর্ধনা সভা ছিল। একে রোজার মাস, তাতে আবার খারাপ ওয়েদার। দুটোর চাপে, উপছে পড়া ভিড় না হলেও উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনা ছিল সভা ঘিরে।

দলীয় কার্যালয়ে প্রার্থীকে দেখতে ভিড় করেছিলেন তৃণমূল কর্মীরা।

তবে ভারতের খেলার জগতের একজন পরিচিত মুখ, যিনি বহুবার বাউন্সার সামলেছেন মাঠে, তেমনি বহুবার সাংবদিকদের প্রশ্নেরও মুখোমুখি হয়েছেন তবে সেটা নিজের খেলার প্রশংসা অথবা সমালোচনায়। সেই তিনি রাজনীতির ময়দানে প্রথম দিন বহরমপুরে সাংবাদিকদের সহজ প্রশ্নের মুখে পড়লেন। কতকটা বাড়িতে অতিথি এলে আমরা যেমন জিজ্ঞাসা করি “কেমন আছেন?” “আসা যাওয়ায় কোনও অসুবিধা হয়নি তো?” “সময়ে খেয়েছেন?” এইরকম। তিনি তারকা। সহজ ও সাধারণ প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন “এটাই তো আমার বাড়ি।” “কী মনে হচ্ছে আমি কি বহিরাগত?” কখনও বলেছেন “ভাষা একটা সমস্যা ঠিকই তবে তেমন কিছু নয়।”

টেক্সটাইল মোড়ের ওই ‘গর্জন সভা’ সেরে পাশের দলীয় কার্যালয়ে এসে বসেছেন, জিরিয়ে নিতে। ভিড় বাড়িয়ে যখন কার্যালয়ের অস্থায়ী প্যাণ্ডেলের নিচে সাজানো চেয়ারে এসে বসলেন তখন তাঁর সামনে গোটা বিশ ত্রিশ প্রথম সারির সাংবাদিক, ইউটিউবার, নিজের দলের নানাবিধ মানুষজনের সোশ্যাল মিডিয়ার লোকজনের মোবাইল ক্যামেরা তাঁর দিকে তাক করে ছিল। সেই সময়টা খুব বেশি হলে পঁয়তাল্লিশ মিনিট। তিনি যখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলছেন, ” ক্রিকেট খেলার সময় অন্যদলের মোকাবিলা করতে যেমন মুখিয়ে থাকতাম এখানেও সেই রকম প্রতিপক্ষ (সে যতই মারকাটারি হোক) তার মোকাবিলা করতে ভালই লাগবে। বেশ মজা লাগছে।” ‘ঘরের ছেলে’ শেষবেলায় বলেছেন “খেলা হবে। জয় বাংলা।”

সেই ভিড়ের ঠিক পিছনেই উঠোন জুড়ে কোণায় কোণায় বসে ছিলেন শহর বহরমপুরের তৃণমূল কর্মী, পুরকর্মীদের একাংশ। তারকাপ্রার্থী সেদিকে ফিরে একটিবার হাতও নাড়লেন না বলে আক্ষেপ করছিলেন তাঁদেরই কেউ কেউ। যাঁরা তাক করে রেখেছিলেন ক্যামেরা। বললেন, “সাংবাদিকরাই বড় হল? আমরা কি ফ্যালনা?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights