সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বারো ঘন্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়ে বুধবার সকাল থেকেই পথে গেরুয়া শিবির। কোথাও বাস আটকে কোথাও ট্রেন আটকে কোথাও জোর করে বাজার বন্ধ করে ধর্মঘট পালন করছেন তারা। আর তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার রাত থেকেই। উল্টো দিকে পুলিশও ‘বেআইনি’ বনধ ব্যর্থ করতে শুরু থেকেই সক্রিয়। যদিও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পারেনি পুলিশ। ব্যারাকপুরের ভাটপাড়ায় সাত সকালেই দুষ্কৃতিদের ছোড়া গুলিতে একজন আহত হয়েছেন। কোন্ননগর, আসানসোলে বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে।
বহরমপুর, কৃষ্ণনগরের মতো এলাকায় ট্রেন অবরোধ করেছেন বিজেপি কর্মীরা। আটকে দেওয়া হয়েছে ভাগীরথী এক্সপ্রেসও। রাস্তায় এখনও সক্রিয়ভাবে রয়েছেন ধর্মঘটিরা। বেসরকারি বাস পথে দেখা না গেলেও সরকারি পরিষেবা চালু আছে। জোর করে বনধ পালন করতে বাধ্য করায় বহরমপুরে বিজেপি কর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করে।
মানুষজন অবশ্য নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে জানান বহরমপুরের বাসিন্দা পেশায় সরকারি কর্মী তুহিন ঘোষ। তুহিন সকালে বাইক করেই নিজের কর্মস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন। বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “জানি না অফিস যাচ্ছি বলে না পেছন থেকে কেউ মাথায় বাঁশের বাড়ি মেরে দেয়।” বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডে ধর্মঘটিদের সঙ্গে পুলিশের বেশ কিছুক্ষণ বচসা হয়। মঙ্গলবারের মতো বুধবারেও বিজেপি’র ডাকা ধর্মঘটে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করে জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা।
তবে রাজনৈতিকভাবে বিজেপি’র ডাকা বনধে সমর্থন নেই কোনও পক্ষেরই। আরজিকর হাসপাতালে এক নিরপরাধ পড়ুয়া চিকিৎসকের খুন হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি বঙ্গবাসী। তাঁর বিচার চেয়ে ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে নাগরিক সমাজ। অথচ সেই দাবি পিছিয়ে গিয়েছে। নাগরিক সমাজের বিচারের দাবিতে লেগেছে রাজনীতির রঙ। কার্যত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দলের পক্ষে টানতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। যা ভাল চোখে দেখছে না সুশীল সমাজ। তাঁরা আজকের বনধের পক্ষে নেই বলেই মত দিয়েছেন। বহরমপুরের ব্যবসায়ী সংগঠনও বনধের বিরোধী।
আজ ২৮ অগস্ট ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। তৃণমূল ছাত্র সংগঠনও এই দিনটিকে প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করে। শাসকদল তৃণমূল বনধের বিরোধিতা করবে স্বাভাবিক। আর সেই বাধা টপকে কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয়েই নিজেদের মতো করে দিনটি পালন করবার প্রস্তুতি নিয়েছে। বনধে সমর্থন নেই কংগ্রেসরও। সিপিএমও বনধের বিরোধীতা করছে বলে জানিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম। আবার ১২ জুলাই কমিটি শ্রমিক, কর্মচারী, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের কর্মস্থলে হাজির থাকতে অনুরোধ করেছে। সংগঠনের দুই নেতা সুমিত ভট্টাচার্য ও মনোজ সাউ রীতিমতো লিফলেট বিলি করে সাধারণ মানুষকে ধর্মঘটে শামিল না হওয়ার অনুরোধ করেছেন। সকলের একটাই আশঙ্কা ” বিজেপির হুজ্জুতিতে নির্যাতিতার বিচারের দাবি হিমঘরে চলে যেতে পারে।”