নয়া ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে শেষ হল স্কুল পড়ুয়াদের জেলাস্তরের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা

Social Share
অনূর্ধ ১৪ বছর বয়সি বালিকা বিভাগের প্রতিযোগিতা চলছে। ছবিঃ বিদ্যুৎ মৈত্র

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মফস্বলের পড়ুয়াদের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলার ঝোঁক বেড়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। কিন্তু দু-একটি ক্লাব ছাড়া সরকারি উদ্যোগে জেলায় ব্যাডমিন্টন খেলা শেখা ও অনুশীলনের তেমন সুযোগ ছিল না বললেই চলে। সম্প্রতি সেই অভাব খানিকটা মিটেছে বহরমপুরে ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি হওয়ার পর। তার এক ঝলক ধরা পড়ল শুক্রবার।

মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের উদ্যোগে ওইদিন বহরমপুরে নব নির্মিত ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে স্কুল পড়ুয়াদের জেলাস্তরের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল। মূলত তিনটি স্তরের স্কুল পড়ুয়াদের জন্য এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদ। অনূর্ধ ১৪, অনূর্ধ ১৭ এবং অনূর্ধ ১৯ বছর বয়সি ৭৮ জন প্রতিযোগী জেলাস্তরে অংশ নিয়েছিল।

এরা সকলেই জেলার বিভিন্ন মহকুমাস্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। প্রত্যেক মহকুমা থেকে চারজন করে সফল প্রতিযোগী এদিনে ব্যাডমিন্টন খেলতে নেমেছিল এই ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। এদিন জেলাস্তরের প্রতিযোগিতায় মূলত শহর বহরমপুরের পড়ুয়ারাই বাজিমাত করে। অনূর্ধ ১৪ বছর বয়সি বালিকা বিভাগে প্রথম হয়েছে গোরাবাজার শিল্পমন্দির গার্লস হাইস্কুলের অনুষ্কা সিংহ, দ্বিতীয় হয়েছে সেন্ট স্টিফেন্স স্কুলের স্মৃতিকা সরকার ও নিমতলা হাইস্কুলের বৃষ্টি মন্ডল এই বিভাগে তৃতীয় হয়েছে।

বালিক বিভাগের প্রতিযোগিতা চলছে বহরমপুরে নব নির্মিত ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে । ছবিঃ বিদ্যুৎ মৈত্র

আর ওই একই বয়সি ছেলেদের বিভাগে প্রথম হয়েছে গোরাবাজার আইসিআইয়ের ছাত্র অভিনব গিরি। মণীন্দ্রনগর হাইস্কুল এই বিভাগে দুটি পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছে অন্য স্কুলকে হারিয়ে। অনি সূত্রধর ও অর্পণ দাস যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে অনূর্ধ ১৪ বছর বালক বিভাগে।

অনূর্ধ ১৭বছর বয়সি বালক বিভাগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে রঘুনাথগঞ্জ বয়েজ হাইস্কুলের অরিত্র দাস ও প্রণয় কর্মকার। আর সৈদাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের সুমন সরকার প্রথম হয়েছে ওই বিভাগে। একই বয়সি বালিকা বিভাগে অন্য সকলকে হারিয়ে প্রথম হয়েছে কাশীশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শুগ্রা খাতুন। দ্বিতীয় হয়েছে গীতারাম আকাদেমির উদিতি দে। তৃতীয় হয়েছ গোরাবাজার শিল্প মন্দির হাইস্কুলের নিকিতা হালদার।

অনূর্ধ ১৯ বছর বালক বিভাগে প্রথম হয়েছে সেবামিলনী হাইস্কুলের অগ্নিধারা মন্ডল, দ্বিতীয় হয়েছে কৌশিক কর্মকার আর তৃতীয় হয়েছে অনুভব হালদার। কৌশিক সৈদাবাদ মনীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের ছাত্র আর অনুভব কমলকুমার মডেল হাইস্কুলের ছাত্র। মেয়েদের এই বিভাগে অবশ্য প্রতিযোগী ছিল মাত্র একজন। জিয়াগঞ্জ রাজা বীরেন্দ্রচন্দ্র সিংহী হাই স্কুলের ছাত্রী ঐষি বসু।

এদিন প্রতিযোগীতার উদ্বোধন করেন জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সামসুর রহমান সহ ক্রীড়া সংসদের কর্তাব্যক্তিরা। প্রতিযোগিতা শেষে সফল প্রতিযোগীদের পুরস্কৃত করা হয়। জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবির বলেন, “জেলাস্তরের প্রত্যেক বিভাগের চারজন করে প্রতিযোগী এরপর রাজ্য পর্যায়ের খেলায় অংশ নেবে।”

প্রতিযোগিতা শেষে সফল প্রতিযোগীদের পুরস্কৃত করা হয়। ছবিঃ সংগৃহিত

ইন্টারনেটের যুগে সাইনা নেহওয়াল, পি.ভি. সিন্ধু, প্রকাশ পাড়ুকোন, শ্রীকান্ত কিদাম্বি, লক্ষ্য সেনরা আর অচেনা নয় আট থেকে আশি কারও কাছে। একইসঙ্গে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার লক্ষ্যের বাইরে ভারতের ব্যাডমিন্টন তারকারা খেলার জগতেও লক্ষ্য স্থির করে দিতে সক্ষম হয়েছেন আজকের কিশোর কিশোরিদের সামনে। এদিন খেলায় অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজনের কথাবার্তায়, চোখে মুখে যেন সেই ছবিই ধরা পড়ছিল। এই ধরনের প্রতিযোগিতা মুর্শিদাবাদের খেলার মাঠে সবুজ সংকেত নিয়ে আসবে বলে মনে করেন জেলার বর্ষীয়ান ক্রীড়াবিদরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights