
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দশ ঘন্টা ৫৫ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড ভাগীরথীতে সাঁতরে যখন ফিনিশিং পয়েন্ট ছুঁয়েছেন বর্ধমানের প্রত্যয় ভট্টাচার্য, রবিবার বিকেলে বহরমপুরের ভাগীরথী তীরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছেন মানুষজন। ২০২৩,২০২৪ আর ২০২৫ পরপর তিনবার জঙ্গিপুরের আহিরন ঘাট থেকে বহরমপুর কলেজ ঘাট পর্যন্ত ৮১ কিলোমিটার সাঁতরে হ্যাট্রিক করেছেন প্রত্যয়। পারে দাঁড়ানো মায়ের গলা তখন গিয়েছে শুকিয়ে। মৃদু হেসে বললেন, ” আশা পূরণ হয়েছে।”
শনিবার বহরমপুরে সাঁতারে অংশগ্রহণকারীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্বর্ধনা জানানো হয়েছিল। সেখানে হাজির ছিলেন বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় সহ ক্রীড়া জগতের অন্য ব্যক্তিরাও। সেদিনও জয়ের ব্যপারে দৃঢ় প্রত্যয় ছিলেন বর্ধমানের এই সাঁতারু। রবিবার ভোর ৫.১৭ মিনিটে আহিরন ঘাটে ছেলে যখন সাঁতারের জন্য ঝাঁপ দিয়েছে ভাগীরথীতে তখন থেকেই মায়ের ইষ্টজপ। বহরমপুরে বলছিলেন, “এই জয় ছিনিয়ে আনতে পণ করেছিল ছেলে।” অন্যদের তুলনায় প্রত্যয়ের দিকেই নজর ছিল বিশ্বের। সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে প্রত্যয়। ভাগীরথীর পারে দাঁড়িয়ে কৌশিক সাঁতরা, জয়ন্ত মন্ডল, জয়জিৎ বিশ্বাসরা বললেন, “দেশের ও দশের মান রেখেছে প্রত্যয়। সাঁতারের পুরস্কার বাইরে যেতে দেয়নি। সরকারের উচিত ওঁর পাশে দাঁড়ানো।”
প্রত্যেক বছর বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ এই সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন। চলতি বছর ৭৯ তম এই প্রতিযোগিতার ৮১ কিলোমিটার বিভাগে ২১ জন সাঁতারু অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তিন জন মহিলা। স্পেনের মাইকেল আর্টিগা ছাড়াও ছিলেন তিন জন বাংলাদেশি। মুর্শিদাবাদের তিন জন সাঁতারুও নাম লিখিয়েছিলেন প্রতিযোগিতায়। তাঁদের মধ্যে তপু সরকার গত বছর এই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় হয়েছিল। প্রত্যয়ের পাশাপাশি গান্ধী কলোনির তপুকেও নিয়েও স্বপ্ন দেখেছিল বহরমপুর। কিন্তু এবার মাঝপথে শরীর খারাপ হওয়ায় প্রতিযোগিতা থেকে সে ছিটকে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চতুর্থ স্থানে ছিল তপু। কিন্তু বেলা একটা নাগাদ পেট ব্যাথা শুরু হওয়ায় সে পারে উঠে আসে।