
বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে মুর্শিদাবাদের শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বে বদল আনল তৃণমূল। এই নিয়ে এক বছরে বহরমপুর সংগঠনে দু’বার শিক্ষক নেতা বদলানো হল। চলতি বছর ২২ জানুয়ারি তৃণমূলের বহরমপুরের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের তৎকালীন সভাপতি দিলীপ সিংহরায়কে ছেঁটে সুদীপ সিংহ রায়কে দায়িত্ব দিয়েছিল দল।
এবার সেই সুদীপ সিংহকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হল সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে। সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখ সমস্ত শিক্ষক সংগঠন ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সেই সময় থেকেই তৃণমূলের অন্দরে ভেসেছিল মূল সংগঠনের বহরমপুরের সভাপতি অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভিড “প্রিয়” সঞ্জয়ের নাম। এদিন সেই নামেই শিলমোহর দিয়েছে দল। জঙ্গিপুরে আসরাফ আলি রাজবীকে সরিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আতাবুল হককে। সরাসরি মূল দলের অনুমতি নিয়ে নেতারা দায়িত্ব পাওয়ায় এবারই প্রথম তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন মর্যাদা পেল শাখা সংগঠনের।
পুজোর পর থেকে দলের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বহরমপুর সংগঠনের জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকারকে নিশানা করে একের পর এক তোপ দেগে চলেছেন আজও। আর তাতে এতদিন ছাত্র, যুব, শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নাম জড়িয়ে সেই সব নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন হুমায়ুন। সঞ্জয় অপূর্ব-র পাশে দাঁড়িয়ে হুমায়ুনের সমালোচনা করেছিলেন সংবাদ মাধ্যমে। ঘনিষ্ঠ মহলে যাকে ‘কাকাতুয়ার শেখানো বুলি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন হুমায়ুন। এবার কি তবে সঞ্জয়ও হবেন বিক্ষুব্ধ বিধায়কের সরাসরি লক্ষ্য? শনিবার সন্ধ্যায় সঞ্জয়ের নাম ঘোষণা হওয়া ইস্তক সেই প্রশ্নেই গুঞ্জন তৃণমূলে।
তবে সঞ্জয়কে তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা সেলের দায়িত্ব দিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা যে অপূর্বর পাশেই আছেন এদিন তা বুঝিয়ে দিলেন বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের। যদিও সেই বিতর্কে না ঢুকে সঞ্জয় দলের শীর্ষ নেতাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। ধন্যবাদ দিয়েছেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
একইভাবে উত্তর মুর্শিদাবাদে দলের একাধিক বিধায়ক, নেতা সমালোচনা করে চলেছেন তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমানের। তাঁর বিরুদ্ধে ও দলের একটি গোষ্ঠী সক্রিয়, যা নির্বাচনের আগে বিরোধী শিবিরকে অক্সিজেন জুগিয়েছে। সেই খলিলুর ঘনিষ্ঠ শিক্ষক আতাবুল হককে জঙ্গিপুর সংগঠনের মাধ্যমিক শিক্ষা সেলের দায়িত্ব দিয়ে সেক্ষেত্রেও খলিলুরের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজয় নেতারা।
এদিন তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষা সেলেরও রদবদল হয়েছে। যদিও বহরমপুর সংগঠনের ক্ষেত্রে সভাপতি বদল হয়নি। পার্থ সারথি সরকারকে সভাপতি রেখে আগের কমিটির কার্যনির্বাহি সভাপতি দেবপ্রসুন ঘোষকে সহ সভাপতি করা হয়েছে। জঙ্গিপুরের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের নেতা করা হয়েছে তহিরুল ইসলামকে।