
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বহরমপুরে একদিকে শাসক দল তৃণমূলের উন্নয়নের প্রচার অন্যদিকে বিরুদ্ধ স্বর সিপিএমের চেনা রুট মার্চে সরগরম পয়লা পৌষ। বুধবার এই দুই দলের সঙ্গে কেন্দ্রের ‘গান্ধী এলার্জি’র বিরুদ্ধেও শহরের পথ দখলে অংশীদারিত্ব ছিল কংগ্রেসেরও।
রাজ্যে গত প্রায় পনেরো বছরের শাসনকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর সরকার এই সময়ে সাধারণ মানুষের জন্য কী কী করেছে তা ফের জনগণের স্মৃতিতে ফেরাতে গ্রাম থেকে শহরে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’। বুধবার নেতাদের সৌজন্যে সেই পাঁচালি শুনল বহরমপুর, হরিহরপাড়া, জিয়াগঞ্জের মতো শহর থেকে গ্রামবাসী।
প্রচারে নতুনত্ব আনতে বহরমপুরে পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় ও হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ নীল-সাদা বেলুন দিয়ে সাজানো টোটো চালিয়ে এই কর্মসূচির প্রচার শুরু করেন। জিয়াগঞ্জ পৌর শহরেও উপ-পুরপ্রধান পরিমল সরকারের নেতৃত্বে দলীয় ব্যানারে প্রচারিত হয় “উন্নয়নের পাঁচালি”।

দলের বহরমপুর সংগঠনের চেয়ারম্যান নিয়ামত বলেন, ” দলের নির্দেশে আমার এলাকার ১২টি অঞ্চলে সরকারের এই উন্নয়নের পাঁচালি প্রচার করা হবে আগামী পনেরো দিনে। সব বিধানসভার ব্লক ব্লকে এই প্রচার করা হবে।” তিনি এটাও বলেন, ” মানুষের প্রয়োজনীয় কাজই করেছে সরকার। যদি কোথাও কোনও খামতির অভিযোগ থাকলে সেটাও শোনা হবে।”
অন্যদিকে ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে তৃণমূলের দ্বি-চারিতার অভিযোগ তুলে বহরমপুর শহরের চেনা রুটে দলের পতাকা হাতে কর্মীদের নিয়ে মিছিলে হাঁটলেন জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ” প্রথমে না বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরে চুপি চুপি ওয়াকফ সংশোধনী আইন কার্যকর করেছেন।” তাঁর আরও অভিযোগ, ” উমেদ পোর্টালে যে সম্পত্তি আপলোড হয়নি তা সংখ্যালঘু মুসলিমদের কাছ থেকে হস্তান্তর হয়ে যাবে। একইভাবে এসআইআর নিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাকে খুশি তাঁকে ওবিসি শংসাপত্র দিয়ে মামলা কাঁধে নিয়েছে। এর ফলে ওবিসিদের জন্য যে সুযোগ ছিল তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ।”
একশো দিনের কাজের চেনা নাম Mahatma Gandhi National Rural Employment Guarantee Act. কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এই প্রকল্প চালু করেছিলেন ২০০৫ সালে। বিশ বছর পরে নরেন্দ্র মোদীর এনডিএ সরকার এই ২০২৫ সালের শেষে সেই নাম পাল্টিয়ে বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ) বা VB-G RAM-G (সংক্ষেপে জি রাম জি) করার প্রস্তাব আনছে। সঙ্গে জুড়ছে আরও কিছু শর্ত।
তারই প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মনোজ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ‘সোচ্চার দিবস’ পালন করে কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেস কার্যালয় থেকে বেরিয়ে একটি মিছিল পরিক্রমা করে চেনা রুট। পরে জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ” জাতীর জনকের নামে চালু প্রকল্পে গান্ধীর নাম বাদ দিয়ে গেরুয়া মোদি স্বেচ্ছাচারিতা করছে। তারই প্রতিবাদে এই কর্মসূচি।”