BJP প্রার্থী পরিচয়ের প্রথম বৈঠকে দূরেই থাকলেন Berhampore MLA

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ বহরমপুরে বিজেপি কোন্দল লোকসভা নির্বাচনের মুখেও মিটল না। দিন দুয়েক আগে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের মতো হেভিওয়েট কেন্দ্রে জনপ্রিয় চিকিৎসক নির্মল সাহাকে প্রার্থী করেছে দল। আজ সোমবার সেই প্রার্থীকে দলের কর্মী, কার্যকর্তাদের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে পরিচয় পর্বের আয়োজন করেছিল বিজেপি’র বহরমপুর সংগঠন। সেখানে ডাকই পেলেন না বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। যদিও জেলা সম্পাদক মলয় মহাজন বলেন, “বিধায়ককেও বৈঠকের কথা জানানো হয়েছিল।” সুব্রত অবশ্য জানান তাঁকে ডাকা হয় নি।

প্রার্থী নির্মল সাহা অবশ্য বলেন তাঁর সঙ্গে বিধায়কের কথা হয়েছে। বিধায়ক তাঁর বাড়িতে এসেওছিলেন। নির্বাচনের লড়াইতে বিজেপিকে আবার কেন্দ্রে তৃতীয়বারের জন্য ফিরিয়ে আনতে সবাই এককাট্টা।

অধীর চৌধুরীর গড় হিসেবে পরিচিত মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে ফিকে হয়েছে কংগ্রেস। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে তৃণমূল স্রোতে ‘গা ভাসিয়েছে’ জেলা কংগ্রেসের নামজাদা নেতারা। আর সেই স্রোতের বিপরীতে জেলায় একটু একটু করে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবির। নিচের তলায় ভিত শক্ত করেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা RSS। বছর তিনেক আগে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে তার প্রমাণ দিয়েছে বিজেপি। যদিও জেলায় বিজেপি বিরোধীরা বহরমপুরের আসন ছিনিয়ে নেওয়ার পেছনে RSS এর থেকেও বিধায়কের ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মাকেই এগিয়ে রেখেছেন। তাঁদের যুক্তি, সমাজকর্মী সুব্রত’র মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগই বিজেপিকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে গিয়েছে। সময় যত গড়িয়েছে সেই সুব্রতর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে দলের।

এই দূরত্বের শুরু জেলায় বিজেপি’র জেলা সভাপতি বদলের সময়। শুধু বহরমপুর নয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে যখন দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তখন রাজ্য জুড়েই দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের খবর ভেসেছে। বাদ ছিল না মুর্শিদাবাদও। সেই সময় থেকেই একটু একটু করে জেলা কার্যালয় থেকে বহরমপুরের বিধায়কের ছায়া সরে গিয়েছে দূরে। সুব্রত যখন বিধায়ক নির্বাচিত হন তখন জেলা সভাপতি ছিলেন গৌরী শঙ্কর ঘোষ। সেই গৌরীকে সরিয়ে বহরমপুরের সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুরনো নেতা শাখারভ সরকারকে। যা মেনে নিতে পারেন নি গৌরী ও সুব্রত ঘনিষ্ঠরা। তারপর থেকেই দুই বিধায়কের সঙ্গেই শাখারভের দূরত্ব বাড়ে বলে সূত্রের দাবি।

মুর্শিদাবাদের দায়িত্ব গৌরীকে দিয়ে বিজেপি তিনটি ভাগে সংগঠন ভাগ করে বিবাদে ছেদ টানার চেষ্টা করে। পরবর্তী সময়ে নিজের মতো করে মুর্শিদাবাদ লোকসভায় সংগঠনকে সাজিয়ে নিয়েছেন গৌরী। তার ফলে তাঁকে সাংসদ নির্বাচনের লড়াইতে তার উপরেই ভরসা রেখেছে বিজেপি। কিন্তু বহরমপুরের বিধায়কের সঙ্গে দূরত্ব আজ ফাটলের চেহারা নিয়েছে। একে অপরের কর্মসূচিতে এড়িয়ে যান বিধায়ক ও জেলা সভাপতি। স্বাভাবিক ভাবেই ইচ্ছা থাকলেও বহরমপুরের আসনে সুব্রতকে প্রার্থী করার কথা ভাবেনি শীর্ষ নেতারা, দাবি এক জেলা নেতার। এদিন সুব্রত বলেন, “দল আমার থেকে খুব ভালো প্রার্থী হিসেবে চিকিৎসক নির্মল সাহাকে বেছে নিয়েছে। নির্মল দা’র জনপ্রিয়ও। সাতটি বিধানসভায় আমাদের দলের অবস্থান ভালো। আর এক লক্ষ ভোট জোগার করতে পারলে আমাদের জয় নিশ্চিত।”

আজকের বৈঠকে বিধায়ক উপস্থিত না থাকলেও আগামীকাল দলের লোকসভা নির্বাচনের কর্মসূচি বিধায়ক শুরু করছেন কাশিমবাজার এলাকা থেকে। স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের অনুমান, দলে সংঘবদ্ধতার প্রভাব পড়বে নির্বাচনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights