সমাজ বাঁচানোর ডাক অধীরের, শাসক ব্যস্ত কোন্দলে

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দিন কয়েকের টানা হাঙ্গামায় থম থমে শমসেরগঞ্জ। অথচ তাকে ঘিরে উত্তেজনার ঘাটতি নেই রাজনীতির মঞ্চে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সরেজমিনে তদন্ত করতে শমসেরগঞ্জেে একটি বিশেষ টিম পাঠানোর কথা জানিয়েছে। কবে সেই টিম মুর্শিদাবাদে আসবে তার দিনক্ষণ পাকা না হলেও তাদের তদন্ত করার সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।

এদিকে শমসেরগঞ্জ সহ উত্তর মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি স্পষ্টতই বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেছেন, ” লাথো কা ভুত বাতো সে নেহি।” বলেছেন, ” নিরপেক্ষতার নামে বাংলার সরকার উল্টে হামলাকারীদের প্রশ্রয় দিয়েছে।”

রাজ্য বিজেপি শমসেরগঞ্জে আক্রান্ত ‘হিন্দু’ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। মালদহের কালিয়াচকের একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া গ্রামবাসীদের কাছে দফায় দফায় ত্রাণ পৌঁছতে বিজেপি কার্যকর্তারা চাঁদা তুলতে শুরু করেছেন। এই মর্মে বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্রও তাঁর কাছের মানুষদের কাছে অর্থ বা অন্য কোনও সামগ্রী সামর্থমতো সাহায্য করবার আবেদন জানিয়েছেন। ১৬ এপ্রিলকে বিজেপি ‘হিন্দু শহিদ দিবস’ ঘোষণা করে ফের সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলতে মাঠে নেমেছে।

জেলায় ফিরে আক্রান্ত শমসেরগঞ্জে ছুটে গিয়েছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। ঘটনাস্থল ও আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সরকারের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। দ্বার্থহীন ভাষায় বলেছেন, ” কোনো রাজনৈতিক দল দেখতে হবে না, আগে সমাজ বাঁচান, সমাজ বাঁচলে রাজনীতি বাঁচবে।” তিনি বলেছেন, ” এই ধুলিয়ানের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি তছনছ করতে চাইছে বিষাক্ত করতে চাইছে, এই মুর্শিদাবাদ জেলাকে আমরা ধ্বংস হতে দেব না।” স্থানীয় মুসলিম কংগ্রেস নেতৃত্ব হিন্দু এলাকায় গিয়ে মানুষকে ভরসা দেবেন বলেও অধীর শমসেরগঞ্জে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছেন।

তবে শাসক তৃণমূলের অন্দরে জেলার এই অসময়েও কোন্দলে বিরাম নেই। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে শীর্ষ আদালতে মামলা করার পাশাপাশি উত্তর মুর্শিদাবাদে অশান্তি ছড়ানো যে তাঁরই দলের একাংশ নেতার নেতৃত্ব দেওয়ার মতো দক্ষতা নেই সে কথা জানিয়ে আসরে নেমেছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। পয়লা বৈশাখ সকালে শমসেরগঞ্জের মাটিতে দাঁড়িয়ে মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান একাংশ পরিযায়ী শ্রমিকের দিকে আঙুল তুলে অশান্তির জন্য দায়ী করেছেন। সেই প্রসঙ্গে পাল্টা হুমায়ুন তাহেরকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেছেন, ” ওরা না থাকলে আবু তাহের সাংসদ হতে পারত না।” তাহের অবশ্য দলের এই “দলবদলু” নেতা কী বললেন আর না বললেন তাঁকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

পুলিশ বাবা-ছেলেকে খুন করার অভিযোগে দু’জনকে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। গন্ডগোল ও সুতি, ধুলিয়ান জুড়ে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুশোর বেশি ব্যক্তিকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এলাকায় সেনা টহলের পাশাপাশি পুলিশি টহলও নজরদারি, নাকা চেকিংও অব্যহত রয়েছে। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ জেলার একাধিক বিধানসভা এলাকা স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল শুরু হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। বহরমপুরেও পাঠানো হয়েছে বিএসএফ। মূলত তাঁর দাবিতেই বহরমপুরে বিএসএফ নামানো হয়েছে বলে দাবি করেন বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র।

সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম বলেছেন, ” নিহত চন্দন দাসের সন্তানদের শিক্ষার দায়িত্ব আমরা নেব। একইসঙ্গে নিহত ইজাজ আহমেদের পরিবারকেও দলের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য করা হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights