বার পুজোতে চাম্পিয়নের প্রার্থনা মুর্শিদাবাদ ডিএসএ-র

Social Share
বহরমপুর স্টেডিয়ামে চলছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে বার পুজো

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পয়লা বৈশাখ আর বারপুজো ময়দানের চেনা ঐতিহ্য, সংস্কারও বটে। বিশেষ করে কলকাতার ফুটবল মাঠের এই বার পুজো একসময় উৎসবের আকার নিত। সেই তালিকায় সবার উপরে ছিল মোহনবাগান আর ইস্টবেঙ্গল। সকলেরই প্রার্থনা ছিল নতুন বছর শুভ হোক। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে ক্লাব বছরভর ম্যাচের পর ম্যাচ জিতে আসুক।

কতকটা সেই ধাঁচেই মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয় বারপুজো। স্টেডিয়ামে এই পুজো করে আসছেন ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা। খুব যে জাঁকজমক করে এখানে এই পুজো হয় তা নয়, তবু বছরভর ভাল খেলে জেলার মান রক্ষার প্রার্থনাতেই এই পুজোর আয়োজন বলে জানান তাঁরা।

এই পয়লা বৈশাখের আগে অবশ্য দলবদলের পালাও শেষ হতো। নতুন খেলোয়ারদের সঙ্গে সমর্থকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হতো এই বার পুজোতে। তখন অবশ্য পয়লা বৈশাখের পরে ফুটবলের নতুন মরশুম শুরু হতো। এখন তা বদলে গিয়েছে। ময়দানে দাঁড়ালে শোনা যায়, এই বার পুজোতে খেলোয়ার অপহরণ করে নেওয়ার গল্প। ভাল খেলোয়ারদের চড়া দামে কিনে গোপন ডেরায় রেখে দিতেন ক্লাব কর্তারা। পরে তাঁকে এই ‘শুভ’ দিনে সামনে আনা হতো। বাঙালির ফুটবলের সেই দিন গিয়েছে, সংস্কারটা থেকে গিয়েছে।

আইএফএর সহ সচিব তথা মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ভাদুড়ীও বলেন, ” আগামী বছর ফুটবলের মরশুম যাতে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়, অংশগ্রহণকারী ক্লাব যেন সাফল্যের সঙ্গে তাদের কার্যকলাপটা সম্পন্ন করতে পারে। জেলা তথা বাংলা যেন ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে জাতীয় স্তরে এই প্রার্থনা করি।”

গত মরশুমে মুর্শিদাবাদ রানার্স হয়েছে ফুটবলে, শেষ মুহুর্তে লড়াইতে হেরে যায়। শুধু পুজো দিলেই নয়, চাম্পিয়ন হতে গেলে যে পরিকাঠামো ও প্রশিক্ষণ দরকার তা অবশ্য মানছেন এই কর্তা। তিনি বলেন, ” কলকাতার মাঠ কাঁপানো খেলোয়ারদের সঙ্গ পায় সেখানকার উঠতি খেলোয়াররা, সেদিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি।” আর সেই খামতি মেটাতে অনূর্দ্ধ ১৪ ও অনূর্দ্ধ ১৭ খেলোয়ারদের জন্য সাপ্তাহিক প্রশিক্ষণ শিবির করার উদ্যোগী হয়েছেন। বার পুজো উপলক্ষে মাঠে হাজির ছিলেন হিন্দ ক্লাবের কর্তা শেখর রায়, জেলা ক্রীড়া সংস্থার চেয়ারম্যান ও অন্য কার্যকর্তারা।

নতুন জার্সি পড়ে করুণাশঙ্কর ভট্টাচার্য ফুটবল আকাডেমির খুদেদের সঙ্গে কর্তারা

জেলা ক্রীড়া সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাবেও আলাদা করে এই দিনে বার পুজো হয়। কোথাও পুজো না হলেও ফুটবলের স্বার্থে প্রীতি ম্যাচও খেলা হয়। বহরমপুরের এক ফুটবল ক্লাব এফইউসি’র করুণাশঙ্কর ভট্টাচার্য ফুটবল আকাডেমিও বার পুজোর আয়োজন করে। ক্লাবের পক্ষ থেকে খুদে খেলোয়ারদের জন্য নতুন জার্সি দেওয়া হয় বলে জানান ক্লাব সম্পাদক তথা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ সম্পাদক জগন্ময় চক্রবর্তী। তিনি বললেন, ” ফুটবল মরশুম শুরু হয় এই পয়লা বৈশাখ। আমাদের ক্লাবে স্থানীয় ছেলেরাই প্রশিক্ষণ নেয়। গত তিন বছর ধরে জেলায় এ ডিভিসনে খেলছে ক্লাবের খেলোয়াররা। তাঁদেরকে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে প্রশিক্ষিত করেন জেলার প্রাক্তন খেলোয়াররা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights