বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা খরচ করতে গিয়ে পদে পদে বাধা পাচ্ছেন জেলা প্রশাসনের। এই অভিযোগে বেশ কিছুদিন ধরেই সরব সাংসদ। লোকসভা নির্বাচনের মুখে সাংসদ তহবিল খরচ করে মানুষজনের যেখানে যেমন প্রয়োজন সেখানে তেমন উন্নয়নমূলক কাজ করছেন অধীর,দাবি জেলা কংগ্রেসেরও। কিন্তু বুধবার বহরমপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জলের প্রকল্পের কাজের জন্য এলাকা পরিদর্শনে গেলে তাঁকে দেখে গো-ব্যাক শ্লোগান দেন স্থানীয় মানুষজন। বহরমপুর টাউন কংগ্রেসের অভিযোগ তৃণমূলের প্রত্যক্ষ ইন্ধনেই এই শ্লোগান দেওয়া হয়েছে অধীরকে ‘অসম্মানিত’ করতে।
ভিডিও তে দেখুনঃ লোকসভা নির্বাচনের আবহে দাবি পাল্টা দাবিতে সরগরম বহরমপুর
অধীর বলেন, ” আমি সেখানে গিয়েছিলাম এলাকার মানুষের সমস্যার সমাধান করতে। কয়েকটি বস্তিতে পানীয় জলের প্রকল্প বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু জেলাশাসক বলছেন আমাকে No objection Certificate নিতে হবে। কীসের NOC? সম্প্রতি একটি নির্দেশ বেড়িয়েছে সাংসদ তহবিলের টাকা যা যা খরচ করতে চাইবে সাংসদ তা জেলাশাসককে করতে হবে। যেহেতু সাংসদ তহবিলের টাকা খরচ হয় না তাই নতুন নির্দেশের সুযোগ নিয়ে আমি সেই টাকা খরচ করছি। কোথাও পানীয় জল কোথাও ইলেক্ট্রিক লাইট কোথাও স্মার্ট ক্লাস তৈরি ও সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করার।” প্রথম দিকে জেলাশাসক কোনও অসুবিধা না করলেও এখন তৃণমূলের নির্দেশে বাধা দিচ্ছে বলেও জানান অধীর। তিনি বহরমপুরের নব নির্মিত সুইমিং পুলের জন্য সাংসদ তহবিলের টাকা জেলাশাসকের কথামতো জমা দেননি বলে তাঁকে এইসব কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
আপনি কি প্রমাণ করতে পারবেন যে এই কাজগুলি কোন NGO এর মাধ্যম দিয়ে হয়ে টাকা চুরি হচ্ছে? টা যদি উনি প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে কি উনি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেবেন? উনি যদি সর্বস্তরের মানুষের কাছে ক্ষমা না চান তাহলে আমরা কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি আমরা কিন্তু অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে কালিমালিপ্ত করার জন্য উনার বিরুদ্ধেও মানহানির মামলাও করতে পারি।-অরিন্দম দাস, বহরমপুর টাউন কংগ্রেস
সাংসদকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল বলেন, “পাঁচ বছর ধরে এমপি। কিন্তু এলাকায় তাঁর দেখা নেই। তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকায় যে.৮০ টি পাম্প বসাচ্ছেন তাতে বড় দুর্নীতি লুকিয়ে আছে। তিন কোটি টাকা খরচ করেছেন নির্মাণ কাজে। আর সৌরবিদ্যুৎ আর জলে ১০ কোটি টাকা খরচ করেছেন। এই দুই কাজের প্রয়োজন নেই। ওগুলো মানুষের কাজে আসছে না। উনি নিজের NGO দিয়ে ব্যবসা করছেন। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আইন ভাঙছেন।”

এখানেই থেমে নি বিতর্ক। অধীর চৌধুরী দুর্নীতি করেছেন প্রমাণ করতে না পারলে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুমকি দিয়েছেন টাউন কংগ্রেসের সভাপতি অরিন্দম দাস। চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্যে করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন ” আপনি কি প্রমাণ করতে পারবেন যে এই কাজগুলি কোন NGO এর মাধ্যম দিয়ে হয়ে টাকা চুরি হচ্ছে? টা যদি উনি প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে কি উনি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেবেন? উনি যদি সর্বস্তরের মানুষের কাছে ক্ষমা না চান তাহলে আমরা কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি আমরা কিন্তু অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে কালিমালিপ্ত করার জন্য উনার বিরুদ্ধেও মানহানির মামলাও করতে পারি।”