সংবাদ প্রতিনিধি, বহরমপুরঃ একদিন আগে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে অধীর চৌধুরী বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর প্রশংসা করেছিলেন। তাঁর সময়ানুবর্তিতার উদাহরণ তুলে ধরে বলেছিলেন, ” বিমান বাবু সেই ঘরানার মানুষ যাঁরা সময়কে গুরুত্ব দেন। যাঁরা খুব কমিটেড পার্সোনালিটি।”
ভোটের প্রচার পর্বে দু’দিন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে সদর শহর বহরমপুরে। সেই দুটি ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীর নাম জড়ায়। লিখিত অভিযোগ হয় বহরমপুর থানায়। সোমবার ওই থানার দুই তদন্তকারী অফিসার ফৌজদারি ৪১ এ ধারায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে ডেকে পাঠান থানায়। থানায় সময়ে হাজিরা দিয়ে বিমান বসুদের ঘরানাকেই যেন গুরুত্ব দিয়ে নিজের ব্যক্তিত্ব বোঝালেন অধীর।
চড়ক পুজোর দিন ভোট প্রচার শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে অধীর চৌধুরী স্থানীয় তৃণমূল কর্মী বিভান দে’কে চড় থাপ্পর মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। যা ধরা পরে সিসি ক্যামেরাতেও। এলাকা সূত্রে জানা যায়, অধীর চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গো-ব্যাক শ্লোগান দেওয়ায় উত্তেজিত হয়ে পরেন বহরমপুরের সাংসদ।
আবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে দিন চারেক আগে শক্তিপুর কান্ডে আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন অধীর। তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি’র বহরমপুর জেলা সভাপতি ও তাঁর দলবল। সেক্ষেত্রেও অভিযোগ, সাংসদ উত্তেজিত হয়ে বিজেপি’র জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারকে ধাক্কা মারেন।
দু’টি ক্ষেত্রেই বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ হয়। জনসমক্ষে জোর করে আটকে রাখা, স্বেচ্ছায় গায়ে হাত তোলা, হুমকি দেওয়া সহ সাংসদের মনোবৃত্তিই এমন, এই অভিযোগ থাকায় পুলিশ একাধিক ধারায় ফৌজদারী মামলা রুজু করে তাঁর বিরুদ্ধে।
অধীর চৌধুরীর আইনজীবী শুভাঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ” ওই দুটি ঘটনায় অধীর চৌধুরীকে দোষী সব্যস্ত করে ৩৪১,৩২৩,২৯৪,৫০৬ ও ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।” সেই মামলার তদন্তেই সোমবার বহরমপুর থানার মেজবাবু ও টাউন ওসি অধীর চৌধুরীকে ডেকে পাঠান বহরমপুর থানায়। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর কানাই রায়ও। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে থাকায় তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা হয়। তাঁকেও ডেকেছিল পুলিশ। শুভাঞ্জন ছাড়াও এদিন বর্ষীয়ান আইনজীবি তুষার মজুমদারও বহরমপুর থানায় হাজির ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে অধীর চৌধুরী দিলেন নিজস্ব প্রতিক্রিয়া
থানা থেকে বেরিয়ে অধীর বলেন, “পুলিশ তিলকে তাল করছে। এতবড় অন্যায় করেছি যে আমাকে থানায় হাজিরা দিয়ে ঘটনার ব্যাখা দিতে হচ্ছে। তৃণমূলের আদেশে আমাকে হেনস্থা করা হচ্ছে।”