
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বহরমপুরে দলের সভাপতি বদলাচ্ছে বিজেপি। এখনও দলীয়ভাবে ঘোষণা না হলেও মলয় মহাজনের কাঁধেই ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বহরমপুরের ভার রাখতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা। আগামীকাল মঙ্গলবার দলীয়ভাবে সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা।
বিজেপি সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সভাপতি শাখারভ সরকারকে সরানোর দাবিদার দলের মধ্যে অনেকে থাকলেও সোমবার পর্যন্ত তাঁদের কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। সেক্ষেত্রে মলয় জমা দিলে তিনি নিরঙ্কুশভাবে কর্মীদের সমর্থন নিয়ে সভাপতি পদে নির্বাচিত হবেন। দলীয়ভাবে দলের বর্তমান জেলা সম্পাদক মলয়ের নাম জেলা সভাপতি হিসেবে তখন ঘোষণা করা হবে বলে বিজেপি সূত্রে জানা যায়। এ ব্যাপারে মলয়কে ফোন করলে তিনি এই খবরের সত্য মিথ্যা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যূষিত মুর্শিদাবাদের ২২টি বিধানসভার মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসন বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদে জয় পায় নরেন্দ্র মোদির দল। তারপরেই দলের নীতি মেনে জেলাকে তিনটুকরো করা হয় সাংগঠনিকভাবে। দল পরিচালনা করতে সুবিধা হবে বলে বিজেপি’র জেলা নেতারা সংবাদ মাধ্যমে দাবি করলেও গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার বিজেপি’র রাজ্য নেতারা মুর্শিদাবাদ সংগঠন তৈরি করে বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষের কাঁধে বকলমে দায়িত্ব তুলে দেয়। দলীয় ভাবে যদিও সভাপতির আসন অলংকৃত করে আছেন গৌরী ঘনিষ্ঠ সৌমেন মন্ডল।
কিন্তু বহরমপুর বিধানসভার ক্ষেত্রে ঘটে তার বিপরীত ঘটনা। জলঙ্গীর বিজেপি নেতা তথা আরএসএস ঘনিষ্ঠ শাখারভ সরকারকে সভাপতি পদের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। আর সেই দিন থেকে বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্র (কাঞ্চন)-এর সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে বর্তমানে প্রায় মুখ দেখাদেখি বন্ধ বিজেপি’র দুই নেতার। দলের কর্মীদের অনেকের কটাক্ষ, ” দলের সভাপতি আর বিধায়কের মধ্যে দূরত্ব এক আলোকবর্ষ। ওই দূরত্ব এক ফুট হলে লোকসভা নির্বাচনে নির্মল দা ( চিকিৎসক নির্মল সাহা বিজেপি প্রার্থী) হাসতে হাসতে জিতে যেতেন।”
কাঞ্চনের বিরুদ্ধেও দলের একাংশ কর্মীর দাবি, ” বিধায়ক দলের নেতা কর্মীদের গুরুত্ব দেন না। নিজেকে দলের থেকে বড় প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন।” সেই সম্পর্ক মলয় সভাপতি হলে কি বদলাবে? এক বিজেপি কর্মী বলেন, ” মলয় দা শিক্ষক মানুষ। দলের সঙ্গে থেকে অনেক কিছু শিখেছেন। শিখছেনও। কোথায় কীভাবে চলতে হবে তা তিনি জানেন। আশা করি এবার দল একটু গুছিয়ে ছাব্বিশের লড়াইতে নামবে। জেতা আসন ধরে রাখা কষ্টকর হবে না।”
প্রসঙ্গত, মন্ডল সভাপতি ঘোষণা হওয়ার পর যখন দলের একাংশ শাখারভ সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছিলেন,বড়ঞাতে সেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল মলয়ের দিকেও। তাঁর কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিজেপি’র কর্মী সমর্থকরা। যদিও সেই অভিযোগের সত্যতা ছিল না বলেই দলের শীর্ষ স্তর সূত্রে জানা যায়।