সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কংগ্রেস ও বামেদের মধ্যে সমঝোতায় ফের তাল কাটল উপনির্বাচন। কোচবিহার ও পুরুলিয়ার রেশ বজায় থাকল আসন্ন উপনির্বাচনেও। ফরোয়ার্ড ব্লকের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিল কংগ্রেস। সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কংগ্রেস একটি আসন পেলেও বামেরা শূন্যই থেকেছে। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে এগিয়েছিল জোট। গত আট বছরের মধ্যে এবারই বাম-কংগ্রেসের মধ্যে বোঝাপড়া কিছুটা দাগ ফেলেছিল জনমানসে। দু একটি ক্ষেত্র বাদ দিলে দু’পক্ষের নিচুতলার কর্মীরা মেনেও নিয়েছিলেন সেই সমঝোতা।
কিন্তু আসন্ন উপনির্বাচন ঘিরে নতুন করে সামনে এল দুই দলের টানাপোড়েন। রাজ্যের চার আসনের উপনির্বাচনে বাগদা আসনে এককভাবে লড়াই করতে চায় কংগ্রেস। নির্বাচন উপলক্ষে আসন সমঝোতায় এই দাবি বামেদের কাছে রেখেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু বিমান বসুরা রায়গঞ্জ, বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ ও মানিকতলা কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র রায়গঞ্জ আসনটি ছাড়তে চেয়েছিলেন । বাগদা আসনে তাঁরা শরিক দল ফরোয়ার্ড ব্লককে আসনটি ছাড়বেন বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস সেই সমঝোতায় না গিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যের দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে আছে বাগদা।

২০১৬,২০২১ ও সদ্য শেষ হওয়া লোকসভায় (বনগাঁ) বাগদা আসন কংগ্রেসকেই ছেড়েছিল বামফ্রন্ট। বনগাঁ লোকসভায় তৃতীয় স্থান পায় কংগ্রেস। ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ কুমার বিশ্বাস পেয়েছেন ৬৫ হাজার ১৭৬ ভোট। তারমধ্যে বাগদায় পেয়েছেন চার হাজার ৮৩৯টি ভোট। সেই যুক্তি দেখিয়ে ফরোয়ার্ড ব্লক ফ্রন্টের কাছে বাগদা উপনির্বাচনে লড়াই করার দাবি জানায়। তাতে সায় দিয়েছেন অন্য শরিকরা। কিন্তু বেঁকে বসে কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এই আসনে একচেটিয়া ফরোয়ার্ড ব্লকেরই আধিপত্য ছিল।
সম্প্রতি শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের দুটি আসনে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল বাম ও কংগ্রেস। তারফল ভাল হয়নি। লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে কংগ্রেসের পিয়া রায়চৌধুরী পেয়েছেন ১০ হাজার ৬৭৯টি ভোট। আর ফরোয়ার্ড ব্লকের নীতিশ চন্দ্র রায় পেয়েছেন ৩০ হাজার ২৬৭টি ভোট। আবার পুরুলিয়ায় একলা লড়ে কংগ্রেসের নেপাল মাহাত পেয়েছেন ১ লক্ষ ২৯ হাজার ১৫৭ ভোট। আর ফরোয়ার্ড ব্লকের ধীরেন্দ্রনাথ মাহাত পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৭২ ভোট।
ভোটে হেরে দুই দলেরই একাধিক জেলার নিচু তলার নেতৃত্বের মধ্যে নতুন করে জন্ম নিয়েছে ক্ষোভ। দুই দলের সব ভোট সংশ্লিষ্ট লোকসভা আসনে সমর্থিত প্রার্থির ভোট বাক্সে পড়েছে কি না তাই নিয়েও সন্দেহ দানা বেঁধেছে পরস্পরের মধ্যে। আগামীদিনে বাম-কংগ্রেসের এই সমঝোতা থাকবে কি না তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে তা যে আরও জটিল হবে তা উপনির্বাচনে এক আসনে দুই দলের প্রার্থী ঘোষণায় ইঙ্গিত থাকল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
যদিও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম বলেন, “পুরুলিয়া ও কোচবিহারের রেশেই এখন এই সমস্যা হল। বিমানবাবু, অধীর বাবুরা কথা বলছেন। আলোচনা করছেন। আলোচনার মধ্য দিয়েই এই সমস্যা কাটবে।” “এআইসিসি থেকে বাগদায় প্রার্থী দেওয়া হয়েছে” ছাড়া আর কোনও মন্তব্য জানার সুযোগ হয়নি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কাছ থেকে।