মমতার থেকেও অধীরে আস্থা বেশি হুমায়ুনের ? ডিজিটাল যোদ্ধার কৌশল নয়তো ?

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্রঃ ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ফের সংবাদ শিরোনামে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুধুই হুমায়ুন আর হুমায়ুন। প্রচার সর্বস্ব যুগে মুর্শিদাবাদে শাসকদলের এক নেতা কিছুদিন অন্তর অন্তর শিরোনাম দখল করে নেন কোনও না কোনও কারণে। ডিজিটাল মার্কেটিং এ হাইপ এখন হুমায়ুন। কখন কী বলেন ভেবে হন্যে হচ্ছেন ডিজিটাল যোদ্ধারা। নির্বাচনের ঘুটি সাজাতে যখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রায় সব দলই, সেই সময় সংবাদ মাধ্যমের সব আলো শুষে নিয়েছেন একা হুমায়ুন। পিছনে চলে গিয়েছে এসআইআর।

একটা নির্দিষ্ট সময় হুমায়ুনকে খোলা মাঠ দিয়ে সাজানো চিত্রনাট্যের মতো তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির দায়িত্বে থাকা নেতারা বৈঠকে বসেছেন। যেন কিছুটা বাধ্য হয়ে। জেলায় কর্মীরা তাকিয়ে আছেন টিভির পর্দায়, কখন কী জানান বড় নেতারা এইভেবে। তাঁকে সাসপেন্ড করা হতে পারে বলে দলের একটা সূত্রের দাবি। তবে তা নিয়ে দলের মধ্যেই দ্বিধা রয়েছে বলে খবর। হুমায়ুনের দাবিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না সেই পক্ষ। দলের একজন সিনিয়র নেতা হিসেবে দলের জেলা নেতারা তাঁকে যে পাত্তা দিতে চান না, তা রাজ্য নেতাদের কাছে পরিস্কার। আর তাই দলের শৃঙ্খলতা হারালে অখিল গিরির মতো নেতারা শাস্তি পেলেও হুমায়ুনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাস্তি দিতে চান না।

আরও পড়ুন…

তিনি জানেন, ” হুমায়ুন অন্য নেতাদের মতো দুর্নীতির দোষে দুষ্ট নন। তিনি যেভাবে দল চালাতে চান, অন্য বিধায়করাও সেইভাবে দল চালাতে চান। কিন্তু হুমায়ুনের রাগকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় থাকা জেলা নেতারা তাঁকে দাবিয়ে রাখতে চান। হুমায়ুন বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলে তখন তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন।” জেলার এক বর্ষীয়ান নেতা শনিবার তা স্পষ্ট করেন। আর এখানেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের হুমায়ুন -কৌশল ধরা পড়ে যাচ্ছে বলে মত তৃণমূলের একাংশ নেতার।

রাজনীতিতে ভেসে থাকার জন্য, জনমনের প্রতিক্রিয়া জানতে একসময় দল বদলের কথা নেতাদের ঘনিষ্ঠরা ছড়িয়ে দিতেন হাটে বাজারে। আজও তা অনুসরণ করেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জমে থাকার জন্য এও কি তবে ডিজিটাল কৌশল ?

হুমায়ুন এতো রাগের মধ্যেও বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ প্রতিষ্ঠার কথা প্রচার করেছেন। নিজে হজে যাবেন বলেও স্পষ্ট করেছেন রাগের মাথায়। বলেছেন, বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেই নির্বাচনে নামবেন। কান্দি পুরসভার হিন্দুরা ‘মুসলিম’ ইউসুফ পাঠানকে ভোট দেননি তাও প্রচার মাধ্যমে উসকে দিয়েছেন। সেই হুমায়ুন কবীর ধর্ম নিরপেক্ষ কংগ্রেসের সঙ্গে ৩০ বছরের সম্পর্ক ত্যাগ করে ঘাসফুলে নাম লিখিয়েছিলেন ২০১২ সালে। তিনি ফিরবেন কংগ্রেসে?

যে হুমায়ুন ঘাসফুল শিবির বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এগিয়ে রেখে অধীর চৌধুরীর সমালোচনা করেন তথ্য দিয়ে, তিনি ফিরবেন অধীরের ঘরে ? এই প্রশ্নেই দোল খাচ্ছে মুর্শিদাবাদ। আর ততই হুমায়ুন কান্ডকে প্রচারের কৌশল বলে ধরে নিচ্ছেন অনেকে।কংগ্রেসের একটা অংশের দাবি, ” দলে নিজের ওজন বাড়াতে হুমায়ুন কংগ্রেস ও অধীরকে ব্যবহার করেছেন।” অধীরও বোঝেন বলেই বলেছেন, ” তৃণমূলে টিকিট নিশ্চিত হলেই এসব আর বলবেন না তিনি। ভোটের টিকিট নিশ্চিত করতেই এসব বলছেন।” আঘাত লেগে বাম পায়ের আঙুল ভেঙে যাওয়ায় বাড়িতে আপাতত বিশ্রামে আছেন মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের চেয়ারম্যান নিয়ামত শেখ। ফোনে তিনি এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য দিতে চাননি। বলেন, ” ও কী বলছে কেন বলছে তা জানি না। এবিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights