
বিদ্যুৎ মৈত্রঃ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে রাজ্য মন্ত্রী সভায় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চেয়েছিলেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমদের কড়া সমালোচনাও করেছিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আর তাই দল বিরোধী মন্তব্যের দরুণ তাঁকে দিন কয়েক আগে শো-কজের চিঠি ধরিয়েছিলেন দলের নয়া শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্যরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মতো জলদি সেই শো-কজের জবাবও দিয়েছিলেন অভিযুক্ত বিধায়ক।
সূত্রের দাবি, হুমায়ুনের জবাবে সন্তুষ্ট কমিটির সদস্যরা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিধায়কদের বৈঠক ছিল বিধানসভায়। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন হুমায়ুনও। সেখানেই আপাতত “এই চ্যাপ্টার ক্লোজড” বলেই জানিয়েছেন দলনেত্রী মমতা। এ ব্যাপারে বিশদে জানতে হুমায়ুনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ” আমি এ বিষয়ে কিছুই বলব না। দলের বারণ আছে।” তবে বিধায়কদের বৈঠকে যাওয়ার ডাক পেয়েছিলেন বলেই সেখানে গিয়েছিলেন, সেকথা অবশ্য জানিয়েছেন তিনি।
তবে সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলে ও সরকারে আরও গুরুত্ব দেওয়ার দাবি উঠেছিল হুমায়ুন ছাড়াও একাধিক মহলে। কিন্তু বিধায়করা আগামী দিনে কী করবেন না করবেন তা নিয়ে কথা বললেও সেই দাবি নিয়ে সরাসরি কোনও কথা এদিনের বৈঠকে বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকে তাঁর ৩২ মিনিটের বক্তব্যে কিন্তু এটা বলেছেন, দলের দেখাশোনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে ও তার সঙ্গে থাকবেন সুব্রত বক্সি। একইসঙ্গে এলাকার দলীয় পদাধিকারী নিয়োগ নিয়ে কোনও সংস্থা মতামত চাইলে তা বিধায়কদের দিতে নিষেধ করেছেন দলনেত্রী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর এই মানসিকতাই প্রমাণ করে অভিষেককে নিয়ে দলের নবীন প্রজন্মের উন্মাদনা থাকলেও তাঁকে আপাতত গুরুত্ব দিতে নারাজ মমতা। শুধু তাইই নয়, তিনি আগামী দিনে ছাত্র ও যুব সংগঠনেরও দেখভাল করবেন নিজে হাতেই। এমন কথাই শোনা যাচ্ছে দলের একাধিক সূত্রে। সব মিলিয়ে তৃণমূল দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে শেষ কথা বলবেন এদিন তাও প্রমাণ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে।
আরও এক ধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেছেন, “প্রত্যেক বিধায়ক আমাদের পরিবারেরর সদস্য।” তাঁদের নিয়ে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ খোলার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সেখানে বিধায়কদের যাঁর যা বলার আছে তা বলতে পারবেন বিধায়করা। তাছাড়া কালীঘাটের মিলন সঙ্ঘ ক্লাবে প্রতি রবিবার বিধায়করা নিজেদের এলাকার উন্নয়ন বা সমস্যার কথা লিখিতভাবেও জানাতে পারবেন বিধায়করা। সরাসরি সেই বিধায়ককে তিনি নির্দিষ্ট সময় অন্তর চিঠি দিয়ে জানাবেন বলেও এদিন প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।