মুর্শিদাবাদে বিজেপি আটকে থাকল দুই বিধায়ক এলাকাতেই

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মাস তিনেক আগে জনতার ম্যান্ডেড মেনে মুর্শিদাবাদের তিন আসনে তিন নম্বর স্থান দখল করেছিল বিজেপি। বহরমপুরের ২৫ বছরের সাংসদ অধীর চৌধুরীকে হারাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে গেরুয়া শিবির। যা আজ পরিস্কার হয়েছে ভোট পরবর্তী বিশ্লেষণে। আর মুর্শিদাবাদ আসনে তৃণমূল ও সিপিএমের লড়াইয়ে ঢুকতেই পারেনি নরেন্দ্র মোদির দল। অথচ এরাই বহরমপুরে ও মুর্শিদাবাদ বিধানসভা আসন দখলে এনে মানুষের মনে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিল জেলায়।

একুশ ও চব্বিশের ফলাফল সম্বল করে জনমত তাঁদের প্রতি আছে এই বিশ্বাস থেকে বুধবার সর্বাত্মক ধর্মঘটের স্বপ্ন দেখেছিলেন বিজেপির তিন সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব। কিন্তু বেলাশেষে রিপোর্ট কার্ডে সবুজ দাগ মিলল শুধু দুই বিধানসভা এলাকাতেই। বাকি কুড়িটি বিধানসভার অধিকাংশতেই মোটা লাল দাগ পেলেন তাঁরা। যেখানে মানুষের স্বতস্ফূর্ত মত দানে বিধায়ক আসন ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি বুধবার সেই বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদের মানুষকে বলপূর্বক ধর্মঘট মানতে বাধ্য করলেন শাখারভ সরকার, সুব্রত মৈত্র, সৌমেন মন্ডলরা। বনধের দিন এলাকায় ছিলেন না বহরমপুরের বিধায়ক।

কিন্তু ভার্চুয়ালী নির্দেশ দিয়ে সুব্রত নিজের গোষ্ঠীকে সচল রাখলেন কাশিমবাজার টু সৈদাবাদ। নবান্ন দখলে গিয়ে কলকাতা থেকে ফিরতে পারেননি বলে দাবি করেছেন তিনি। বিধায়কের অনুপস্থিতে বহরমপুরে দলের জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার,অনামিকা ঘোষেরা কখনও ফলের দোকানে গিয়ে কখনও স্কুলে গিয়ে রীতিমতো ধমকে চমকে বনধ পালন করতে বাধ্য করলেন। নয়ছয় করলেন কয়েকটি দোকানের সামগ্রী। আক্ষরিক অর্থেই তান্ডব চালালেন। গ্রেফতারও হলেন। শাখারভ অস্বীকারও করলেন হুজ্জুতি করে তাঁরা বনধ পালন করেননি বলে। বিধায়ক সুব্রত মৈত্র বললেন, “মানুষ দু-হাত তুলে আমাদের ডাকা বনধ সমর্থন করেছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।” অথচ সকালে যে স্কুলে গিয়ে তান্ডব চালালেন বহরমপুরের বিজেপি কর্তারা দুপুরে সেই স্কুলই হল বেলা দেড়টা পর্যন্ত। সমস্ত সরকারি স্কুলে শিক্ষকদের উপস্থিতির হার নব্বই শতাংশ। জেলা প্রশাসনিক ভবনেও উপস্থিতিতে কারও লাল দাগ পড়েনি বলেই দাবি করলেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।

একইরকমভাবে লালবাগ, জিয়াগঞ্জের মতো এলাকাতেও রাস্তা আটকে, দোকানের সাটার নামিয়ে স্বতস্ফূর্ত ধর্মঘটের দাবি করলেন বিজেপি নেতারা। মুর্শিদাবাদ বিজেপি সভাপতি সৌমেন মন্ডল বলেন, “দলদাস প্রশাসন কর্মচারীদের বাধ্য করেছে রাত্রীবাস করতে। অথচ কর্মীরা নৈতিকভাবে আমাদের সমর্থন করেছেন। কিন্তু তাদেরকে হুমকি ধমকি দিয়ে শীর্ষ আধিকারিকরা বাধ্য করেছেন অফিসে আসতে। কিন্তু সমস্ত ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছেন। আমাদের দল সাধারণত ধর্মঘট ডাকে না। কিন্তু পরিস্থিতি এতটা ভয়ঙ্কর হয়েছে যে সাধারণ মানুষের চাপে দল বনধ ডাকতে বাধ্য হয়েছে।” উত্তরেও দলের পতাকা নিয়ে নেতারা শ্লোগান দিলেন,সেখানে অবশ্য কোনও সমর্থন পাননি তাঁরা।

জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বনধের বিরোধীতা করে বললেন, “ধর্মঘটে আমাদের লোকসান হয়। করোনা পরবর্তী সময় থেকে এখনও আমরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারিনি। পুজোর মরশুমের শুরুতে হঠাৎ করে বনধ ডেকে দিয়ে আমাদের কী উপকার করল তা জানি না। আমরা বনধ সমর্থন করি না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights