সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এবারের মত সাঙ্গ হল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বা আইপিএল। চেন্নাইয়ে এই টি-২০ লিগের ফাইনালে দশ বছর পর চ্যাম্পিয়ন হল শাহরুখ খানের কেকেআর। রানার্স হায়দরাবাদ সানরাইজার্স। শর্ত মতো চাম্পিয়ন দল পাবে ২০ কোটি টাকা। রানার্স দল পাবে ১৩ কোটি টাকা। আর তৃতীয় ও চতুর্থ দল পাবে যথাক্রমে সাত ও সাড়ে ছ’কোটি টাকা।
এছাড়াও ব্যক্তিগত নানান পুরস্কার তো আছেই। সব মিলিয়ে চলতি বছর আইপিএলে পুরস্কার মূল্যই প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। তবে শুধু খেলোয়ার বা দলের মালিকরাই যে আইপিএলে লক্ষ্মীর মুখ দেখেছেন এমন নয়। আবার এই টি-২০ গেমকে ঘিরে যে দেশজুড়ে জুয়ার কারবার চলে বিষয়টি তেমনও নয়। গবেষকরা বলছেন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভারতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে আইপিএল।
আইপিএলের টিকিট বিক্রি থেকে, স্পনসরশিপ এমনকি সম্প্রচার স্বত্ত বিক্রির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের কর আদায় করে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয় পর্যটনেও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে এই আইপিএল। প্রাইভেট কোর্টের মত সংস্থা আইপিএলকে গুরুত্ব দিচ্ছে এর উজ্জল অর্থনীতির জন্যই। ফাউন্ডার ম্যাগাজিনের দাবি, ২০০৭ সালে আইপিএল শুরু হওয়ার পর জনপ্রিয় এই টি-২০ খেলার ভারতীয় অর্থনীতিতে ব্যপক প্রভাব রয়েছে। বিশ্বের ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে আকর্ষণীয় হওয়ায় ফি বছর আন্তর্জাতিক পর্যটকরা ভারতে আসেন। তার ফলে হোটেল থেকে স্থানীয় পরিবহন ফুলে ফেঁপে ওঠে মাস দুয়েক।

তাছাড়াও স্থায়ী কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আইপিএলকে কেন্দ্র করে বিপুল সংখ্যক অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান হয় ভারতে। খেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দল সাপোর্ট স্টাফ হিসেবে কর্মী নিয়োগ করে। ফলে একলপ্তে মোটা টাকা আয় করবার সুযোগ আসে দেশের একাংশ বেকারের কাছে। অনেক সময় স্থায়ী কাজেরও সুযোগ করে দেয় এই আইপিএল।
প্রতি বছর, আইপিএল আমাদের দেশে বিলিয়ন ডলার নিয়ে আসে। শুধুমাত্র ২০২০ সালে, ভারত প্রায় $৬.৭বিলিয়ন অর্থোপার্জন করেছে এই খেলা থেকে। যার একটি বড় অংশ আসে আইপিএল ম্যাচ সম্প্রচারের স্বত্ব বিক্রি করে। ২০১৮-২২ এই স্বত্ব বিক্রি হয়েছিল $২.৫৫ বিলিয়নে।দেশের যেখানে যেখানে আইপিএল খেলা হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থার দাবি সেখানকার ছোট ব্যবসায়ীদের ২০-২৫ শতাংশ আয় বৃদ্ধি হয়েছে গত দু’মাসে।

শুধু বিনোদন নয় শেয়ার বাজারের ওঠানামাতেও আইপিএলের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। ২০০৯ সালে ২৬ শতাংশ রিটার্ন দিয়েছিল আইপিএল, যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তেমনি পতনও দেখেছে শেয়ার বাজার। এনরিচমানির মতে, ব্রডকাস্টার, কনজিউমার স্ট্যাপল, বেভারেজ এবং আতিথেয়তার মতো সেক্টরগুলি আইপিএল চলতি আইপিএলে সর্বোচ্চ লাভের মুখ দেখতে পারে।
ইটি-ইনসাইটের দাবি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি থেকে শুরু করে উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করে আইপিএল। কর রাজস্ব আদায় থেকে লিগের প্রভাব বিভিন্ন সেক্টরে প্রতিফলিত হয়, ভারতীয় ক্রিকেট এবং বাণিজ্যের মূল ভিত্তি হিসেবে এই খেলা নিজের অবস্থানকে মজবুত করে।
আরও পড়ুনঃ ‘প্রান্তিক’এ আশ্রয় মমতার, বিঁধল সিপিএম