‘প্রান্তিক’এ আশ্রয় মমতার, বিঁধল সিপিএম

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, কলকাতাঃ ফ্যাসিবাদ বিরোধী রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন-“নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস/ শান্তির ললিত বাণী শোনাইবে ব্যর্থ পরিহাস/বিদায় নেবার আগে তাই/ডাক দিয়ে যাই/দানবের সাথে যারা সংগ্রামের তরে/প্রস্তুত হতেছে ঘরে ঘরে।/(‘প্রান্তিক’/১০ সংখ্যক কবিতা)। বিজেপি ও সিপিএমকে একাসনে বসিয়ে ভরা জৈষ্ঠ্যে রবীন্দ্রনাথের ‘প্রান্তিক’এই রবিবার যাদবপুরে ভরসা খুঁজলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা শুনে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম বললেন, ” রবীন্দ্রনাথের কবিতায় নিজেকেই শনাক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।”

‘রেমাল’এর আশঙ্কাকে উপেক্ষা করে প্রথমে সোনারপুর স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে পরে যাদবপুরের বারো ভুতের মাঠে রবিবার দুটি জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সরকারি প্রকল্পে ভর দিয়ে দলের প্রার্থী বদলে যাওয়ার কৈফিয়ত দিলেন নির্বাচনের দিন পাঁচেক আগে। সোনারপুর ও যাদবপুরে সম্ভবত এবারের শেষ ভোট প্রচার করলেন তিনি।

এক অভিনেত্রী সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে সরিয়ে আর এক অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে এবার লড়াইতে নামিয়েছেন মমতা। তাঁর দলের শীর্ষস্তরের এক নেতা সকালে বলেছিলেন, “সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো হেভিওয়েট সিপিএমকে হারিয়ে দিল্লির রাজনীতিতে কংগ্রেসের হয়ে নাম কিনেছিলেন দিদি। তাই এই কেন্দ্রে দিদির জেতার আত্মবিশ্বাস আছে। তাই পালা করে আর এক অভিনেত্রীকে টিকিট দিয়েছেন তিনি।” তার উত্তরও এদিন যাদবপুরের সভা থেকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, মিমির তুলনায় সায়নী বেশি কড়া, ঝগড়া করতে পারে, তাই তাঁকে প্রার্থী করেছে দল।

রবিবার বিকেলে ঝড়ের পূর্বাভাস মিলিয়ে দিয়েছে ‘রেমাল’। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সন্ধ্যা হতেই রাজ্যের উত্তর দক্ষিণের একাধিক জেলায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট রয়েছে একাধিক এলাকায়। যাদবপুরের পূর্বাভাসও কী টের পেয়েছেন মমতা? এই প্রশ্নই একইসঙ্গে উড়ল সোনারপুর থেকে বারুইপুরে। যাদবপুর লোকসভায় মিমি ও সায়নীর থেকেও গুঞ্জনের মধ্যমণী বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। আর তাই শেষ দফা নির্বাচনে ঝড় উঠবে যাদবপুরে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের এমনটাই দাবি।

আরও পড়ুনঃ গণতন্ত্রের পক্ষ নিল উপত্যকা

২০০৯ সাল থেকে তৃনমূলের দখলে থাকা যাদবপুরে এবার হাওয়া বদলের ইঙ্গীত রয়েছে সমীক্ষাতেও। সিপিএমের সৃজনের সঙ্গে রয়েছে কংগ্রেসও। যে কংগ্রেসের হয়ে ” নাম কিনেছিলেন দিদি।” এই লোকসভার সাতটি বিধানসভার ছ’টিতে তৃনমূল ক্ষমতায় রয়েছে। সমীক্ষায় উঠে আসছে, একাংশ টালিগঞ্জ বাদ দিলে দুই বারুইপুর, দুই সোনারপুর এমনকি ভাঙরের একটা বড় অংশের মানুষের মন বদলাচ্ছে। ভোট প্রচারে তরুণ সৃজনের ভার ও ধার টের পেয়েছেন স্থানীয় মানুষজন। তাঁদের দাবি, সায়নীর ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটা।

সেই সম্ভাবনাই কি মমতা উসকে দিয়ে গেলেন রবিবার? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিটি সভার মত এদিনও গতানুগতিক আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোনারপুর স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে তিনি বলেন, “সিপিএমের হার্মাদরা এখন বিজেপি হয়ে গেছে, এদের কখনো ক্ষমা করবেন না।” সেলিম বললেন, “এসব বস্তাপচা বক্তব্য উনি অনেকদিন ধরেই রাখছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights