
পম্পি সিদ্ধান্তঃ একশ আঠাশ জন চিত্র শিল্পীর একশো ছিয়ানব্বইটি ছবি ও ভাষ্কর্য নিয়ে, বারো থেকে ষোলোই এপ্রিল, ২০২৫, বহরমপুর শহরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘আইরিস’ শিল্প কেন্দ্রের দশম বার্ষিক প্রদর্শনী। এই বিভ্রান্ত সময়েও জীবনের নানাবিধ জটিলতার শিল্পীত সমাধানের প্রত্যাশায় মানুষের ঢল নামল প্রদর্শনী ঘিরে।
‘আইরিস’-এর কর্ণধার চিত্রশিল্পী কার্তিক পাল ও তাঁর ছাত্র ছাত্রীদের কাজ দেখার সুযোগ মিলল শহরবাসীর। জলরঙ থেকে অ্যাক্রেলিক পেন্টিং তো বটেই সাথে লিনোকাট, স্কাল্পচার, নিউ মিডিয়াম, বুক কভার, নানা জাতের নানা কাজে প্রদর্শনী সাজানো হয়েছিল। উল্লেখ্য যে প্রদর্শনী থেকে শিল্পীরা কেউ কেউ কমবেশি বাণিজ্যিক লাভ ওঠাতে পেরেছেন।
স্থানীয় শক্তিমন্দির ক্লাবের মাঠে, অস্থায়ী গ্যালারীতে ঢোকার মুখেই ছিল আর্ট সম্পর্কে বিদগ্ধ শিল্পীদের নানান উপলব্ধির বিবরণী, যা অবশ্যই উদ্যোক্তাদের শ্রেণী সচেতনতার পরিচায়ক। সেই সাথে গ্যালারীর ফেসিয়ারটির নান্দনিকতার কথা বলতেই হয়। বিজ্ঞাপণ দুনিয়ার পক্ষে তা নিতান্ত শিক্ষনীয়।
কাজের গুণগত মাণ সর্বদা সমান নয়, যেহেতু ছাত্র ছাত্রীদের তুলে ধরাটাই উদ্দেশ্য তাই সেটি স্বাভাবিক। দেখা গেলো অনেক ছবিই কিন্তু নেট মাধ্যমে লব্ধ বিখ্যাত কিছু ফটোগ্রাফের নকল। সিনিয়র শিল্পীদের অনেকের কাজেই ড্রয়িং স্কিল যতটা প্রকাশ পেয়েছে চেতনার বিশিষ্টতা সেভাবে ধরা পড়ে নি। রিয়ালিস্টিক স্ট্রোকে যাঁরা কাজ করতে চেয়েছেন, তাঁদের বুঝতে হবে ডিজিটাল পেন্টিংয়ের সাথে তাদের প্রতিযোগিতা করতেই হবে। সেদিক থেকে অনেকের কাজ বেশ কাঁচা। অন্যদিকে রয়েছে কার্তিক বাবুর বেশ কয়েকটি কাজ, যেগুলি ইতিমধ্যেই জাতীয় স্তরে বহুল প্রশংসিত।
গ্যালারী সংলগ্ন মুক্ত মঞ্চটি আলাদা প্রাপ্তি। সেখানে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থিত দর্শক মণ্ডলীর পছন্দ হয়েছে বোঝা গেলো বার বার। শ্রী সুদীপ রায়, শ্রী সলিল দাস, শ্রী কাজি হাসানুর, শ্রী অভিজিৎ রায়চৌধুরী, মৃগাঙ্ক মণ্ডল প্রমুখ বিদ্বজ্জন উপস্থিত হয়েছেন এই প্রদর্শনীতে। দশম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রদর্শনীর শেষ দিন সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে শিল্পী দেবব্রত সরকার, অধ্যাপক ড. শৈবাল রায়, নাট্যব্যক্তিত্ব অনুপম ভট্টাচার্য এবং কবি তাপস সরখেল মহাশয়কে।

অধ্যাপিকা, ইতিহাস বিভাগ, পাঁচথুপী কলেজ