সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ১৯৯০ সালের ঘটনা। আরজিকর হাসপাতালে নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনা আবহে ২০২৪ সালে তাকে প্রাসঙ্গিক করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। কী হয়েছিল আরজিকর হাসপাতালে? রাজ্যের এই পুরনো মেডিক্যাল কলেজে নিশুতি রাতে একলা এক মহিলা চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। যা নিয়ে উত্তাল দিল্লির রাজনীতিও। তারই প্রতিবাদে ১৫ আগষ্ট ‘রিক্লেম দ্যা নাইট’ আন্দোলনের নামে গ্রাম বাংলাও মধ্যরাতে রাস্তা দখলের ডাক দিয়েছে।
সেই আন্দোলনকে কখনও নাটক কখনও পথনাটিকা তকমা দিয়ে সমাজমাধ্যমে কুনাল লেখেন “বামরাম মুখোশ পরে রাতে পথনাটিকা করবে। তাতে সামিল হবেন না। ওরা বানতলা, ধানতলাসহ অসংখ্য ঘটনার ধারক বাহক। এখন একটি বিচ্ছিন্ন কুৎসিত ঘটনা নিয়ে ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমেছে।” কখনও লেখেন “এরপর থানায় বধূ নির্যাতন, বধূ হত্যা বা শাশুড়ি নির্যাতনের মামলা এলে পুলিশ সংশ্লিষ্ট শাশুড়ি, ননদ, বউমাকে পুলিশ ধরবে না তো? সবাই তো মহিলা। আজ যারা নাটকের ইভেন্টে যাবেন, সেই বিশেষজ্ঞরা কী বলেন? আরজিকর প্রতিবাদ আমাদেরও। দোষীদের শাস্তি আমরাও চাই। তবে রামবামের সুযোগসন্ধানী নাটকে নেই।”
১৯৯০ সালে ইস্টার্ন মেটোপলিটনের কাছে বানতলায় একদল দুষ্কৃতি তৎকালীন স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিতা দেওয়ান ও তাঁর সঙ্গী আরও এক স্বাস্থ্যআধিকারিককে একটি ধানক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। বাধা দিতে গিয়ে মৃত্যু হয় অনিতা দেওয়ানের। মারা যান গাড়ির চালকও। যা সেই সময় পশ্চিমবাংলায় আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। সেদিনের ঘটনা সামনে এনে বুধবার বেলা আড়াইটে নাগাদ উত্তর কলকাতায় অনিতার বাড়ির সামনে হাজির হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী, কাউন্সিলরা। সেখানে অস্থায়ী মঞ্চ বেঁধে আরজিকর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক হত্যায় জড়িত দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা। এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন কুনাল। তিনি বলেন, “আমাদের সাফ কথা, আরজিকর ইস্যুতে প্রতিবাদ হবেই। ফাঁসি হোক দোষীদের। মুখ্যমন্ত্রী, অভিষেক কড়া অবস্থান নিয়েছেন। আমরা সবাই প্রতিবাদী। কিন্তু সিপিএম, বিজেপির চক্রান্ত করা রাজনৈতিক ইভেন্ট বরদাস্ত করব না। ওদের জমানার পরের পর অপকীর্তি মনে করাব।”
তাঁর দাবির পাল্টা দাবি করেন বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ এর রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতী সাহা। তিনি বলেন, ” চোরের মায়ের বড় গলা। আমরা ঘটনার দিন থেকে কলেজের সামনে ধর্ণা দিচ্ছি। বিজেপি সেই যে গেল আর এল না এদিকে। তাহলে বুঝুন কার সঙ্গে কার সেটিংস। আসলে এগুলো কিছুই নয়, সত্যি ঘটনা ধামাচাপা দিতে, প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতে এসব ওদের ফন্দি ছাড়া কিছু নয়।”
তিনি আরও বলেন ” এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজন অধ্যক্ষকে একজায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় প্রাইজ পোষ্টিং দিচ্ছে। তার চাকরি কী করে থাকে? কলেজের অধ্যক্ষ গ্রেফতার হল না অথচ একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে বাহাদুরি কুড়োনোর চেষ্টা করছে সরকার। অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে যা হয়েছে তা দু তিনজনের কাজ। মৃতার যৌনাঙ্গে ক্লীপ পাওয়া গিয়েছে। তৃণমূল মহিলাদের সম্মান দিতে শেখেনি। অথচ রাজ্যে একাধিক মহিলা মন্ত্রী ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী নিজেই একজন মহিলা। তাও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে যাচ্ছে।”