ক্ষতিপূরণের মোটা অঙ্ক পাওয়ার নির্দেশ বাস্তবে মিলবে তো প্রশ্ন জমিদাতাদের

Social Share

সংবাদ প্রতিনিধি, কলকাতাঃ আদালতের নির্দেশে মোটা অঙ্কের টাকা পেতে চলেছেন জমিদাতারা। খাতায় কলমে না হলেও আদালতের রায়ে এমনটাই জানা যাচ্ছে। যা শুনে জমিদাতা তফিজুর শেখ বলেন, “যতক্ষণ না হাতে পাচ্ছি কিছুই বলা যাচ্ছে না।”

কেন এত টাকা পাবেন তফিজুররা? জানা গেল বারাসত থেকে ডালখোলা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য বহরমপুরের বাইপাস তৈরি করতে হত। তার জন্য আঁধারমানিক ও বাসুদেবখালির চাষযোগ্য জমির প্রয়োজন ছিল। সেই জমি সরকার কিনেছিল ওই এলাকার জমি দাতাদের কাছ থেকে। কিন্তু তার জন্য ২০১০ সালে যে দাম ধার্য্য হয়েছিল তা বাজারমূল্যের থেকে অনেক কম। বাজারমূল্যে জমির দাম না দেওয়ায় ক্ষতিপূরণ নেননি জমি দাতারা। ন্যায্যমূল্যে জমির দাম পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৩০ জন জমিদাতা। সেটা ২০১৬-১৭ সাল নাগাদ। তফিজুল বলেন, ” ২০১৪ সালে আমাদের ২৭ হাজার টাকা শতক জমির দাম দিয়েছিল। আর তখন বাজার মূল্য ছিল ৮১ হাজার টাকা শতক। আমি ৪৩ শতক জমি দিয়েছিলাম।” বর্তমানে আইন বদলে গিয়েছে।

হাইকোর্ট একাধিকবার নির্দেশ দিলেও জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি গতি পাচ্ছিল না। অবশেষে গত সপ্তাহে সালিশি বা আরবিট্রেশন করে মালদা ডিভিশনের ডিভিশনাল কমিশনার সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর নতুন আইনে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ২০১০ সালের দেওয়া জমির জন্য ২০১৩ সালের কেন্দ্রের নতুন ক্ষতিপূরণ আইন মেনে জমিদাতারা বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পাবেন।মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের আঁধার মানিক এবং বাসুদেবখালী মৌজার ৩০ জন জমি দাতার ক্ষেত্রে নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ ৯ শতাংশ সুদ সমেত মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার। ।

মামলাকারীদের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, ” রাজ্য এতদিনে নতুন আইনে ক্ষতিপূরণের দাবি মেনে নেওয়ায় জমি জটে আটকে যাওয়া রাজ্যের বহু প্রকল্প গতি পাবে। ২০১৩ সালের আগে যাঁরা সরকারি প্রকল্পে জমি দিয়ে ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাননি বা নেননি, তাদেরই নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। আর নতুন আইন কার্যকর হলে জমির বর্তমান বাজার দরের প্রায় চার গুণ দাম পাওয়ার কথা জমি দাতাদের।” কিন্তু এতদিন রাজ্য নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ দিতে না চাওয়ায় আইনি জটে আটকে যায় বহু প্রকল্প। সেই দাবি করে তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রের নতুন আইনের শুধু সিডিউল এক এ রাজ্য আপাতত কার্যকর করলেও বাকি দুটি সিডিউলও যাতে কার্যকর করা হয় এবার জমিদাতাদের সেই নিয়ে আইনি লড়াই করতে হবে। তিনি প্রাথমিক হিসেব দিয়ে বলেন, এখন এই ৩০ জন নতুন আইনে অন্তত সাড়ে তিনশ গুণ বেশি ক্ষতিপূরণের অর্থ পাবেন বলে আশা করা যায়।”

নতুন আইন রাজ্য কার্যকর করায় শুধু এই জাতীয় সড়ক নয়, গুজরাত থেকে অসম এশিয়ান হাইওয়ে, বীরভূমের উপর দিয়ে যাওয়া ১৪ নাম্বার জাতীয় সড়ক সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে জমি দিয়ে নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ না পাওয়া জমিদাতারা উপকৃত হবেন বলে আশা আইনজীবীদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights