
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিজেপির বহরমপুর সংগঠনের সভাপতি পদে দলের বর্তমান জেলা সম্পাদক মলয় মহাজন একাই মনোনয়ন জমা দিলেন। দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তি ওই পদে মনোনয়ন জমা দেননি মঙ্গলবার। স্বাভাবিকভাবে একদিকে যেমন নির্বাচন এড়ানো সম্ভব হয়েছে তেমনি প্রকাশ্যে আসেনি গোষ্ঠী কোন্দল। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব এটাই চেয়েছিলেন।
আপাত দৃষ্টিতে সবকিছু ঠিক আছে মনে হলেও দলের জেলা সংগঠনের সর্বোচ্চ পদে বসতে রাজি ছিলেন যাঁরা, তাঁদের মনে এখনও কুয়াশা। এই মূহুর্তে বাগড়া দিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কু নজরে পড়তে চাইছেন না কেউ কেউ। তাঁদের একাংশের প্রার্থনা, ” ভালোয় ভালোয় উতরে যাক বৃহস্পতিবার। তারপর না হয় দেখা যাবে।” ওইদিন রাজ্য সভাপতি ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা। সেইসঙ্গে মলয় মহাজনকে জেলা সভাপতি হিসেবে চুড়ান্ত ছাড়পত্র দেবে মুরলীধর লেন।

এদিন দলীয় নির্দেশ মেনে দুপুর দুটোর সময় জেলা দফতরে হাজির হয়ে একাংশ নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতেই মনোনয়ন দাখিল করেন মলয়। তাঁর পাশে ছিলেন বিদায়ী সভাপতি শাখারভ সরকার। এদিন শাখারভ বলেন, ” আমার টিমের একজন পরবর্তী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন। বহুদিন আমরা একসঙ্গে দল করছি। আশাকরি রাজ্য নেতৃত্বও আমাদের এই মতামত মেনে নেবেন।” কিন্তু তিনি নিজে দ্বিতীয়বারের জন্য মনোনয়ন দিলেন না কেন ? শাখারভ বলেন, ” আমি একই পদে দুবার থাকতে আগ্রহী নই।” ডিসেম্বরের ২৫ তারিখেই জেলা সভাপতি হিসেবে শাখারভের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
বিজেপি কার্যকর্তা হিসেবে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল বুথ সভাপতি হিসেবে। পরবর্তী কালে যুব মোর্চার মন্ডল সভাপতি থেকে জেলা সম্পাদক হয়ে মূল সংগঠনের জেলা সভাপতি পদে বসেছেন জলঙ্গীর এই গেরুয়া নেতা। সেটা ২০২১ সালের শেষদিকে। সেই দায়িত্ব নেওয়া ইস্তক একাধিকবার গোষ্ঠী কোন্দলে সরাসরি তাঁর নাম জড়িয়ে বিতর্ক বেঁধেছে বহরমপুরের গেরুয়া বাহিনীতে। বেসামাল কোন্দলে লাগাম টানতে পারেননি তিনি। বহরমপুরে বিজেপির প্রথম বিধায়ক সুব্রত মৈত্রের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে আজ দুই নেতার মধ্যে অদৃশ্য পাঁচিল উঠেছে। মলয় মহাজন ছিলেন তাঁরই দলের জেলা সম্পাদক। তাঁর সঙ্গেও অন্তরের মিল ছিল না বলেই দাবি করছেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ।
এদিন মহাজন দায়িত্ব নেওয়াতে যে বিজেপির বহরমপুর সংগঠনে মলয় বাতাস বইবে তাও হলফ করে কেউ বলতে পারছেন না। আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জেলা কমিটি তৈরি হবে। অঘোষিত এখনও ১৩টি মন্ডল সভাপতি। তাও ঘোষণা হবে মহাজন জমানায়। পুরনো কমিটির অন্যতম পরিচিত মুখ লাল্টু দাস বলেন, ” সবার সিদ্ধান্তে মলয় দা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন। যদি ভবিষ্যতে আবার তেমন কোনও সমস্যা হয় তখন উনিও সবার মতামত নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন।”
কোন্দলের প্রশ্নে মলয়ের কৌশলী জবাব, ” কেউ সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেননি মানেই দলের সবার সম্মত্তিতেই আমি মনোনয়ন জমা দিলাম। কোন্দল থাকলে হাসিমুখে সবাই ফুল মিষ্টি হাতে শুভেচ্ছা জানাতে নিশ্চয় আসতেন না।” বিধায়কের প্রশ্নেও সতর্ক মহাজন বলেন , ” তিনি তো আমাদের দলেরই বিধায়ক, এই পদে মনোনয়ন নিরঙ্কুশ মানে তাঁরও যে সম্মত্তি আছে মনে হচ্ছে না? ” বিধায়ক সুব্রত ওরফে কাঞ্চনের নির্মোহ সংলাপ ” দল যা ভাল বুঝেছে করেছে। আমার কিছু বলার নেই।” শাখারভের অবশ্য নজর ওপরের দিকে। রাজ্য রাজনীতিতে আগ্রহী কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি রাজ্য নেতৃত্বের কোর্টে বল ঠেলে বলেন, ” যদি তাঁরা ভাবেন রাজ্য সংগঠনের হয়ে কাজ করতে তাহলে তাই করবো।”